শাহ জাহান আলী মিটনঃ
সাতক্ষীরায় একটি কথা প্রচলিত আছে- ভাদ্র মাসে শীতের জন্ম। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরেই ঋতুচক্র কিছুটা যেন নিয়ম হারিয়ে ফেলেছে। শীতের অনুভূতি পেতে পেতে কার্তিক মাস গড়ায়। সাতক্ষীরায় এবারও কার্তিকে এসে শীতের আমেজ পাওয়া না গেলেও ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং পরবর্তী কড়া নাড়তে পারে শীত ।
তবে ইতিমধ্যে শীতের আমেজ অনুভব করতে শুরু করেছে সাতক্ষীরার গ্রামঞ্চালের মানুষ। ভোর বেলা কুয়াশা আর শীতল হাওয়া মনে করিয়ে দিচ্ছে গরম কাপড়ের প্রস্তুতি নিতে।
এ সময় প্রকৃতিতে চলে বর্ষার বিদায় আর শীতের আগমনের প্রস্তুতি। কিন্তু বর্ষাঋতুে তেমন বৃষ্টির দেখা মেলেনি সাতক্ষীরায়। প্রকৃতিতে বৃষ্টি শেষে শীত আসে একটু একটু করে। তবে এমনটা দেখাযায়নি গত চার-পাঁচ দিনে।তবু রাতের প্রকৃতির বুকে নিঃশব্দে নেমে এসে মেলে ধরছে কুয়াশার চাদর, ভোর রাতে ঠান্ডা হাওয়ায় ফুরফুরে প্রকৃতি। ভোররাতে হিম হিম বাতাস।
অবশ্য এ সময়কে প্রাকশীতও বলা হয়। এখন হেমন্তকাল। তাই ভোরে সূর্য ওঠার আগে ঘরে গরম, বাইরে ঠান্ডা অনুভূত হবে। একটু একটু করে শীত নেমে আসবে। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং কাটতে না কাটতে নভেম্বরে শুরু হতে পারে ‘মিষ্টি শীত’ । ডিসেম্বরে এর তীব্রতা আরো কিছুটা বাড়বে। আর জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে শীত অনুভূত হবে সর্বোচ্চ।
শীতের আগমন সাতক্ষীরার মানুষের মনে এক অনাবিল আনন্দের জন্ম দেয়। শীত শুরুর আগেই কৃষকের ফসল কাটা প্রায় শেষ হয়ে আসে। আর গোলাভরা ধানের এ আনন্দকে উৎসবে পরিণত করতে আয়োজন করা হয় রস-পিঠার। রস আর পিঠার এ আয়োজন চোখে পড়ে গ্রামের ঘরে ঘরে। আর দিনকয়েক পরেই কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়বে সাতক্ষীরা । কনকনে ঠাণ্ডায় কাঁপতে কাঁপতে দৈনন্দিন কর্মযজ্ঞ চালিয়ে যেতে হবে সবাইকে। আর সবাইকে প্রস্তুত হতে হচ্ছে শীতকে বরণ করতে।
সাতক্ষীরায় সাধারণত ডিসেম্বর থেকে শীতের শুরু হয়। কিন্তু অগ্রহায়ণ পেরিয়ে পৌষ-মাঘ শীতকাল ধরা হলেও হেমন্তেই শীত অনভূত হওয়া শুরু। গত কয়েক দিন ধরেই সকালের তাপমাত্রা ক্রমেই কমছে। আগামী কয়েক দিনেও তাপমাত্রা কমতে থাকবে। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাবে সাতক্ষীরায় চলতি সপ্তাহের শেষভাগে থেকেই শীতের আমেজ অনুভূত হতে পারে। যদিও কিছু কিছু অঞ্চলে এখনই শীত অনুভূত হচ্ছে। সপ্তাহের শেষ নাগাদ বাতাস বয়তে পারে উত্তর দিক থেকে।
শীত আসতে আরো কিছু দিন বাকি থাকলেও প্রস্তুতি এখনই চোখে পড়ছে। শীতের প্রধান আকর্ষণ খেজুরের রস সংগ্রহে বিভিন্ন এলাকায় গাছিরা গাছ প্রস্তুতের কাজ শুরু করে দিয়েছেন।
প্রস্তুতি নিচ্ছেন হকার, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং মার্কেটের ব্যবসায়ীরাও। শীতের পোশাকে সাজবে সব দোকান। আর কয়েক দিন পরেই যে জমবে বিকিকিনি।