স্টাফ রিপোর্টার: দেবহাটায় বাবার মৃত্যুর আগে রেখে যাওয়া সম্পত্তি জবরদখলের লোভে রাবেয়া বেগম নামের এক গর্ভধারিণী বৃদ্ধ মায়ের ঘর ভেঙে মাকে ভিটেছাড়া করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন ৫ পুত্রসন্তান। ঘটনাটি উপজেলার সখিপুর ইউনিয়নের চক মোহাম্মাদালীপুর গ্রামের। ভুক্তভোগী বৃদ্ধা চক মোহাম্মাদ আলীপুর গ্রামের মৃত আরিজুল্লাহ গাজী ওরফে আদু’র স্ত্রী। এনিয়ে একাধিকবার পুত্রদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিয়েও আশানুরূপ কোন ফল পাননি ওই হতভাগা মা। প্রতিবারই থানা থেকে শালিস বৈঠকের মাধ্যমে মিমাংসা করে দেয়া হলেও, কয়েকদিন যেতে না যেতে আবারো ওই মায়ের প্রতি নির্যাতন শুরু করেন তার পুত্র সন্তান ও পুত্রবধূরা। সম্প্রতি মায়ের কুঁড়েঘরটি ভেঙে সেখানে পাকা ঘর বাধছেন মেজ ছেলে রেজাউল করিম। আর মাকে তার ঘর থেকে বের করে বাড়ির অদূরে বাশবাগানের কাছাকাছি বাবার কবরস্থানের পাশে আরেকটি ঝুপড়ি ঘর বেধে সেখানে আশ্রয় দেয়ার পরিকল্পনা আটছেন ৫ ছেলে। শুধু তাই নয়, মৃত্যুর আগে দেনমোহর বাবদ মায়ের নামে বাবার লিখে দেয়া ১৫ শতক জমিও ফেরত নিতে বাবা-মায়ের দলিলের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা ঠুকে দিয়েছেন মানুষরূপী এসব অমানুষ সন্তানেরা। গর্ভের সন্তানদের এমন আচরণে বর্তমানে বুকভরা কষ্ট ও চোখের পানি ঝরিয়ে সুবিচারের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন ওই হতভাগা মা রাবেয়া খাতুন।
সোমবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় মায়ের বর্তমান বসবাসের কুঁড়ে ঘরটির কিছু অংশ ভেঙে ফেলে সেখানে নতুন ঘর বাঁধছেন ছেলে মেজ ছেলে রেজাউল। এসময় সাংবাদিকদের দেখেই মায়ের ওপর চটে যান তিনি।
কান্নাজড়িত কন্ঠে বৃদ্ধ মা রাবেয়া খাতুন জানান, সংসারিক জীবনে তাদের ৫ পুত্র সন্তান ও ৩ কন্যাসন্তান আছে। তার স্বামী মৃত আরিজুল্লাহ গাজীর ৩৯ শতক জমি ছিল। দেনমোহর বাবদ ২০০৭ সালে ১৫ শতক জমি তিনি রাবেয়া খাতুনের নামে লিখে রেজিষ্ট্রি দলিল করে দিয়ে যান। ২০১৭ সালে তার স্বামীর মৃত্যুর পর ওই ১৫ শতক জমি দখলে নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে ৫ ছেলে মনিরুল ইসলাম, রেজাউল করিম, রফিকুল ইসলাম, শফিকুল ইসলাম ও রবিউল ইসলাম। তারা মায়ের নামে বাবার লিখে দেয়া জমির দলিলকে ‘জাল দলিল’ বলে প্রচার দিতে থাকে। পাশাপাশি মাকে তার বসবাসের কুড়ে ঘর থেকে বের করে সেই জমিও দখলে নিতে নানা অপচেষ্টা চালাতে থাকে ছেলেরা। এনিয়ে প্রতিবাদ করতে গেলে বৃদ্ধ মা ও বোনেদের ওপর তারা বিভিন্ন সময়ে নির্যাতন চালিয়ে আসছে বলেও অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। বর্তমানে ছেলেদের দ্বারা নির্যাতিত এবং আশ্রয়হীন হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন মা রাবেয়া খাতুন। সুবিচারের জন্য পুলিশ সুপারের হস্তাক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি।
পূর্ববর্তী পোস্ট