শাহ জাহান আলী মিটনঃ
সাতক্ষীরা ৩০ আনসার ব্যাটালিয়নের মাসিক দরবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার ১১ ই জুলাই সকালে সাতক্ষীরা পুরাতন জমিদার বাড়ী ৩০ আনসার ব্যাটালিয়নের সদর দপ্তরে ৩০ আনসার ব্যাটালিয়ানের পরিচালক এনামুল খাঁন’র সভাপতিত্বে এ মাসিক দরবার অনুষ্ঠিত হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন ৩০ আনসার ব্যাটালিয়ানের সহকারী পরিচালক রোকসানা শারমীন।
দরবারের শুরুতেই পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে পবিচালক মহোদয় হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের সকলের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে উপস্থিত সকল কর্মকর্তা, কর্মচারী ও বিভিন্ন পদবীর ব্যাটালিয়ন আনসার সদস্যদের স্বাগত জানিয়ে দরবার কার্যক্রম শুরু করেন।
তিনি অত্র ইউনিটের যে সকল ব্যাটালিয়ন আনসার সদস্য অসুস্থ হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তাদের সুস্থতা কামনা করেন। ৩০ আনসার ব্যাটালিয়ন প্রতিষ্ঠালগ্ন হতে অদ্যাবধি যে সকল ব্যাটালিয়ন আনসার সদস্য মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন এবং পরম করুণাময় আল্লাহ তা’য়ালার দরবারে তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন।
পরে সদ্য প্রশিক্ষণ সমাপ্ত করে অত্র ৩০ আনসার ব্যাটালিয়নে যোগদানকৃত ছয় জন সদস্যকে ফুলের শুভেচ্ছা জানানো হয়। যোগদানকৃত নবীন সৈনিকরা হলেন মো. আকাশ সরকার, মো.আল আসমাউল হুসনা, মো. রাজু আহাম্মদ, মো. আল আছিন শিশির, মো. মারুফ রহমান জনি এবং মো. কাজল ইসলাম। পরিচালক এনামুল খাঁন ৩০ আনসার ব্যাটালিয়নে তার ১১তম মাসিক দরবার অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলের উদ্দেশে গত এক মাসের উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম তুলে ধরেন। এরপর দরবরে উপস্থিত কারো কোন পয়েন্ট ও ইউনিটের সমস্যা জানতে চাইলে, এপিসি মো. সাইফুল ইসলাম, হাবিলদার মো. জিল্লুর রহমান, নায়েক মো. শফিকুল ইসলাম, ল্যান্স নায়েক মো. মফিজুল ইসলাম ও ব্যাটালিয়ন আনসার মো. আনিসুর রহমান তাদের বিভিন্ন সমস্যা সমূহ তুলে ধরেন। উল্লেখিত সমস্যা পর্যায়ক্রমে সমাধানের জন্য সভাপতি মহোদয় আশ্বাস দেন। তিনি ইউনিটের সকল সদস্যগণকে একে অন্যের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে নিষ্ঠার সাথে অর্পিত দায়িত্ব ও কর্তব্য যথাযথভাবে পালন করার নির্দেশনা প্রদান করেন। যে কোন ব্যাক্তিগত বা পেশাগত সমস্যার ক্ষেত্রে সিনিয়র সদস্য বা কোম্পানী কমান্ডার বা সহকারী পরিচালক অথবা পরিচালক মহোদয়ের সাথে আলোচনা করার নির্দেশনা দেন যাতে কেউ হতাশাগ্রস্থ না হন। এসময় তিনি আরো বলেন, বিদ্যুৎ ও পানির ব্যবহারে মিতব্যয়ী হতে হবে, কোন প্রকার অপচয় করা যাবেনা। সদর দপ্তর কর্তৃক প্রদত্ত মেন্যু অনুযায়ী মেসে খাবার সরবরাহ করতে হবে। সৈনিকদের শৃংঙ্খলার মান বজায় রাখা, সময়মত পরিবার পরিজনের সাথে যোগাযোগ রাখা, স্থানীয় জনগনের সাথে সু-সম্পর্ক বজায় রাখা, ধর্মীয় অনুশাসন ও রীতিনীতি মেনে চলা এবং মহাপরিচালক মহোদয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য কার্যক্রমে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করার দিক নির্দেশনা প্রদান করেন। সরকারি কোন আদেশের কপি কর্তৃপক্ষের পূর্ব অনুমোদন ছাড়া অনলাইনে বা স্যোস্যাল মিডিয়ায় দেওয়া যাবে না। সদস্যগন পরষ্পরের সাথে দেখাসাক্ষাতে যথাযথভাবে সালাম ও শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। কোন ধরনের প্রতারনা (চাকুরী বা বিবাহের প্রলোভনে), নীতি বহির্ভুত ও শৃঙ্খলা পরিপন্থি আচরন বরদাস্ত করা হবে না, সবাইকে এসব বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।দরবারে আগামী জাতীয় সমাবেশ উপলক্ষে পদক ও পুরষ্কারের প্রস্তাব প্রেরণের লক্ষ্যে কৃতিত্বপূর্ণ ও উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম গুলো সংরক্ষণ করে রাখার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন। রোল কল ও অন্যান্য সকল কার্যক্রমে যথাসময়ে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহন করতে হবে। এসময় পরিচালক এলাকার স্থানীয় জনসাধারনের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখা এবং তাদের যে কোন প্রয়োজনে তাদের পাশে দাড়ানোর নির্দেশ দেন। ব্যাটালিয়নের গোপনীয় তথ্য ব্যতিত অন্যান্য পেশাগত তথ্য ও বাহিনীর ভাবমূর্তি উজ্জল হয় এরুপ তথ্য প্রদানের ক্ষেত্রে আগ্রহী হতে হবে। তাছাড়া ৩০ আনসার ব্যাটালিয়ন সাতক্ষীরায় আগমনের পর থেকে ব্যাটালিয়নের পরিচালকের নির্দেশনা মোতাবেক বিভিন্ন শাক সবজি উৎপাদন করে স্বল্পমূল্যে ব্যাটালিয়রে সদস্যদের মেসে বিক্রি করে ২৭৫০০/-টাকা স্থানীয় তহবিলে জমা করায় বাগান পরিচর্যা কারী সদস্য এপিসি আব্দুস সোবাহান, ল্যান্স নায়েক মো. বশির আহম্মেদ, ব্যটালিয়ন আনসার হাচানুজ্জামানকে ধন্যবাদ জানান এবং তাদের বিশেষ প্রনোদনা প্রদান করেন। সবশেষে তিনি উপস্থিত সকলের সুস্বাস্থ্য কামনা করে দরবারের সমাপ্তি ঘোষনা করেন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালকের দ্বায়িত্ব পালন করেন ৩০আনসার ব্যাটালিয়নের কোম্পানী কমান্ডার মাইনুল হাসান ।