নিজস্ব প্রতিবেদক :
যথাযথ মর্যাদায় ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে সাতক্ষীরায় পবিত্র ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসলিম বিভিন্ন ঈদগাহে ঈদের জামাতে অংশগ্রহণ করেন। শনিবার (৭ জুন) সকাল সাতটায় শহরের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে হাফেজ খতিব আব্দুল খালেক এঁর ইমামতিতে ঈদুল আজহার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এসময় সেখানে নামাজ আদায় করেন জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ,সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মুহাম্মদ মনিরুল ইসলাম।
এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শেখ মঈনুল ইসলাম মঈন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শোয়াইব আহমাদ। আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের উদ্বোধন কর্মকর্তারা , জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবিদ, সহ কেন্দ্রীয় ঈদগা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাতক্ষীরা জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি বিশিষ্ট সমাজসেবক আলহাজ্ব ডা. আবুল কালাম বাবলা, অধ্যাপক নূর মোহাম্মদ পাড়, সদস্য আব্দুল আজিজ, আলেম-ওলামা সহ ধনী ,গরিব , সর্বস্তরের মুসলিম উম্মাহ। অন্যদিকে ৭.১৫ মিনিটে পলাশপোল ঈদগাহ মাঠে, সকাল ৭.৪৫ মিনিটে লস্কার পাড়ায় ঈদগাহ মাঠ, সকাল ৭ টায় মিলবাজার আব্দুল দালাল ঈদগাহ মাঠসহ শহরের বিভিন্ন ঈদগাহে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসলমান এই দিনটি উদযাপনের জন্য ঈদগাহ ময়দানে নিজ নিজ জায়নামাজ সহ হাজির হয়ে পবিত্র ঈদুল আযহার নামাজ আদায় করেন। উক্ত নামাজে ইমামতি করেন হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম। ঈদুল আজহা মুসলিম উম্মাহর ঐক্য,শান্তি, সমৃদ্ধি, ভ্রাতৃত্ববোধ অটুট করে। বৃহৎতম এই ধর্মীয় উৎসবে ধনী, গরিব সব মানুষের মনপ্রাণ ঈদের আনন্দ উচ্ছ্বাসে মিলে যায়। প্রবৃত্তির দাসত্ব, লোভ-লালসা, হিংসা-বিদ্বেষসহ মনের পশুত্বকে পরাভূত করার শিক্ষা দেয় কোরবানির। মহান আত্মত্যাগ, আত্মসমর্পণ এবং নিজেকে উৎসর্গ করার মহিমায় উদ্ভাসিত মুসলিম উম্মাহর বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা।
আল্লাহ তায়ালার প্রতি অপার আনুগত্য এবং তারই রাহে সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের এক ঐতিহাসিক ঘটনার স্মরণে মুসলিম বিশ্বে ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়ে আসছে। মুসলিম জাতির পিতা হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর আত্মত্যাগ ও অনুপম আদর্শের প্রতীকী নিদর্শন হিসেবে কোরবানির রেওয়াজ। আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের নির্দেশে হজরত ইব্রাহিম (আ.) তার প্রাণপ্রিয় পুত্র হজরত ইসমাইলকে (আ.) কোরবানি করতে উদ্যত হয়েছিলেন। এই অনন্য ঘটনার স্মরণে কোরবানি প্রচলিত হয়। আরবি ‘কুরবান’ শব্দ থেকে কোরবানি। এর অর্থ—ত্যাগ, উৎসর্গ, বিসর্জন, নৈকট্যলাভ। পরিভাষায় একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নৈকট্যলাভের উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট দিনে, নিদিষ্ট সময়ে, নির্দিষ্ট ব্যক্তির পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট পশু জবেহ করাকে উযহিয়্যা বা কোরবানি বলে। মনের পশু অর্থাৎ কুপ্রবৃত্তিকে পরিত্যাগ করা। মূলত আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য প্রয়োজনে নিজের প্রিয় বস্তুকে কোরবানি দেওয়ার প্রস্তুতির শিক্ষাই এ ঈদের আদর্শ। আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে দ্বিধাহীনভাবে তার কাছে আত্মসমর্পণ এবং তার নির্দেশ শর্তহীনভাবে মেনে নেওয়াই হলো ঈদুল আজহার প্রকৃত শিক্ষা দেয়।
পূর্ববর্তী পোস্ট