আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
মিয়ানমারের জান্তা সরকার আরও ৫০ বিক্ষোভকারীকে গুলি করে হত্যা করেছে। শনিবার দেশটির সশস্ত্র বাহিনী দিবসেই সামরিক বাহিনীর হাতে প্রাণ হারালেন এসব গণতন্ত্রকামী মানুষ। খবর রয়টার্সের।
দিবসটি সামনে রেখে আগেই বিশাল বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন মিয়ানমারের গণতন্ত্রকামী আন্দোলনকারীরা। তবে সেই আন্দোলনে গেলে মাথা ও পিঠে গুলি করা হতে পারে বলে শুক্রবার রাতে হুঁশিয়ারি দেয় জান্তা সরকার।
বিজ্ঞাপন
মিয়ানমারের রাষ্ট্রপরিচালিত এমআরটিভি নিউজ চ্যানেলে সম্প্রচারিত এক ঘোষণায় বলা হয়, আগের জঘন্য মৃত্যুগুলোর ট্র্যাজেডি থেকে শিক্ষা নেয়া উচিত যে, [বিক্ষোভে গেলে] আপনি মাথা ও পিঠে গুলি লাগার ঝুঁকিতে পড়তে পারেন।
এরপরও পূর্বনির্ধারিত ঘোষণা অনুসারে শনিবার রাস্তায় নামেন বিক্ষোভকারীরা। এদিন ইয়াঙ্গুন, মান্দালয়সহ দেশটির বিভিন্ন শহরে শোনা গেছে জান্তাবিরোধী স্লোগান।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম মিয়ানমার নাউয়ের খবর অনুসারে, সকালে ইয়াঙ্গুনের দালা শহরতলীতে একটি পুলিশ স্টেশনের বাইরে বিক্ষোভরত জনতার ওপর গুলি চালিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। এতে অন্তত চারজন নিহত এবং ১০ জন আহত হন।
রয়টার্স বলছে, ইনসেন জেলায় গুলি করে হত্যা করা হয়েছে তিনজনকে। এর মধ্যে একজন স্থানীয় অনুর্ধ্ব-২১ ফুটবল দলের খেলোয়াড় ছিলেন।
মিয়ানমার নাউয়ের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানায়, শনিবার সারাদেশে অন্তত ৫০ জন নিহত হয়েছেন। তবে নিহতের সংখ্যা নিশ্চিত করতে পারেনি রয়টার্স।
সামরিক বাহিনীর মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
অন্য সংবাদমাধ্যমগুলোর তথ্যমতে, চারজন প্রাণ হারিয়েছেন পূর্বাঞ্চলীয় লাশিও শহরে, বাগো অঞ্চলে মারা গেছেন আরও চারজন। এছাড়া, উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় হপিন শহরে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে আরও একজনকে।
গত ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত নেতাদের নিয়ে গঠিত গোষ্ঠী সিআরপিএইচের মুখপাত্র ডা. সাশা একটি অনলাইন ফোরামকে বলেন, আজ সশস্ত্র বাহিনীর জন্য লজ্জার দিন। সামরিক জেনারেলরা ৩০০ জনেরও বেশি নিরীহ মানুষকে হত্যা করে এখন সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপন করছেন।
এদিকে, সকালে মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদোতে সামরিক বাহিনীর কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে দেশটির জান্তা সরকারের প্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইং বলেছেন, তারা ‘গণতন্ত্রের জন্য’ লড়াই চালিয়ে যাবেন।
কোনও সময়সীমা না জানিয়ে নির্বাচন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে এ সেনাশাসক বলেন, দাবি জানাতে গিয়ে সহিংসতা করা স্থিতিশীলতা এবং নিরাপত্তার জন্য হুমকি। এধরনের কর্মকাণ্ড একেবারেই অনুচিত।