সাতক্ষীরা ট্রিবিউন ঃ সাতক্ষীরা শহরতলীর বাইপাস সড়কে এক চা বিক্রেতাকে জবাই করে হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহত ইয়াছিন মোল্যার স্ত্রী তাসলিমা খাতুন বাদি হয়ে বুধবার রাতে এ মামলা দায়ের করেন। তবে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিশ কোন ক্লু উদ্ধার করতে পারেনি। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করা হলেও গ্রেপ্তার করা যায়নি কোন হত্যাকারিকে। সন্ধান মেলেনি নিহতের কাটা মুন্ড ও হতাকান্ডের ব্যবহৃত অস্ত্র।
আটককৃতরা হলেন, পুরাতন সাতক্ষীরার শহর আলী কবিরাজের বাড়ির এলাকার ভ্যান সাবেক নির্মাণ শ্রমিক ও বর্তমানে ভ্যান চালক ইয়াছিন আলী, সদর উপজেলার মাছখোলার রানা ও মাছখোল ক্লাব মোড়ের মাহাফুজ হোসেন।
সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুর পূর্ব সরদারপাড়ার তাছলিমা খাতুন জানান, পুরাতন সাতক্ষীরা নির্বাচন অফিস এলাকায় তার স্বামী ইয়াছিন মোল¬ার একটি চায়ের দোকান ছিল। তার সঙ্গে এল্লারচর এলাকার এক ব্যক্তির সুসম্পর্ক ছিল। দোকানে ওই লোক মাঝে মাঝে যাতায়াত করতো। এছাড়াও ধুলিহরের বুধোরডাঙি এলাকার নূর হোসেনের সঙ্গে তার স্বামীর সুসম্পর্ক ছিল। তিনিও দোকানে নিয়মিত আসতেন। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তার স্বামী ইয়াছিন দোকানে যান। কিছুক্ষণ পর তিনি জানান যে, তার এল¬ারচর এলাকার বন্ধু তাকে বাইপাস সড়কের পার্শ্ববর্তী একটি জায়গায় ঘর নির্মাণ করার জন্য তাকে ছুতোর মিস্ত্রী হিসেবে নিয়ে যাবে। এ জন্য তিনি কিছু টাকা পাবেন। রাতে ঘর নির্মান কেন এমন প্রশ্নের জবাবে বিরোধপূর্ণ জমি তাই মালিক রাতে কাজ করাতে চান। রাত ৮টার দিকে তার বড় মেয়ে জেসমিন তার ভাসুরের শ্বশুর বাড়ি শহর আলী কবিরাজের বাড়ির পাশে যাওয়ার সময় বাবাকে দোকানে বসে থাকতে দেখেন। একটি ভ্যানে করে রাত সাড়ে ৮টার দিকে তাকে নিয়ে একটি ভ্যানে করে বাইপাসের দিকে রওনা হন একটি অচেনা ভ্যান চালক। ঘর নির্মাণের সামগ্রী হিসেবে শহর আলী কবিরাজের বাড়ির পাশের এলাকার ভ্যান চালক ইয়াছিনের কাছ থেকে একটি হাত করাত, মাছখোলার রানার কাছ থেকে একটি ড্রিল মেশিন ও মাছখোলার মাহাফুজের কাছ থেকে একটি ব্যাগ নিয়ে যান স্বামী ইয়াছিন। এ সময় ইয়াছিন ফোন করে তাকে জানান যে তার ফিরতে রাত ১২ টা বাজতে পারে। রাত সাড়ে ৯টার পর ইয়াছিনের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। বুধবার সকালে বাইপাস সড়কের পাশে একটি জলাশয় থেকে পুলিশ ইয়াছিনের মুন্ড বিহীন লাশ উদ্ধার করে। লাশ দেখতে যেয়ে তিনি তার স্বামী বলে চিনতে পারায় পুলিশ তাকে থানায় নিয়ে আসে। তার বলা মতে এল্লারচরের সেই ব্যক্তির বাড়ি খুজে বের করা সম্ভব হয়নি। তবে পুরাতন সাতক্ষীরার শহর আলী কবিরাজের বাড়ির এলাকার ভ্যান চালক ইয়াছিন আলী, সদর উপজেলার মাছখোলার রানা ও মাছখোল ক্লাব মোড়ের মাহাফুজ হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। তবে বুধোরডাঙি এলাকার নুর হোসেনের সঙ্গে তিনি যোগাযোগ করতে পারেননি।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক বিশ্বজিৎ অধিকারি জানান, বৃহষ্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোন আসামীকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। বুধবার রাতে নিহতের স্ত্রী বাদি হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনার ক্লু উদ্ধার করতে কয়েকজনকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।