ডেস্ক রিপোর্ট ঃ
সাতক্ষীরার সীমান্তের বিভিন্ন চোরাপথদিয়ে ভারত থেকে অবৈধভাবে বাগদার নোপলি ও গলদার রেণু পোনা এনে বাজারজাত করছেন কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই এসব রেণু সাতক্ষীরা ও খুলনাঞ্চলের অনেক ঘেরে ছাড়ছেন চাষিরা। ফলে চিংড়ি চাষে ঝুঁকি বেড়ে গেছে। ভাইরাস ও জীবাণু ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও রয়েছে।
সাতক্ষীরা দেবহাটার কুলিয়া ব্রীজ এর নিচে গড়ে উঠেছে ভারতীয় গলদা ও বাগদা রেণু পোনার বাজার। সাতক্ষীরার ভোমরা সীমান্তের লক্ষীদাঁড়ী ২ নাম্বার, ইমিগ্রেশন অফিসের পেছনদিয়ে,শাঁখরা ও পদ্মশাঁখরা সহ দেবহাটার সীমান্তের বিভিন্ন চোরাপথে প্রতিরাতে ২শ থেকে ৩শ বল বাগাদা ও গলদা রেণু পোনা আসে। এসব রেণু পোনা সরাসরি চলেযায় দেবহাটা উপজেলার কুলিয়ার পোনা বাজারে।
নির্ভর যোগ্য সূত্র জানিয়েছে, ভারতের ইটিন্ডির ঢ্যামঢেমির মতিনুর ও গোলাম সীমান্ত পার করে দেয়। ভোমরা সীমান্তের লক্ষীদাঁড়ী এলাকার মোহাম্মদ আলীর ছেলে ইবাদুল ও ভোমরা বন্দরের টাওয়ার মোড় এলাকার বাদশা গাজীর ছেলে মন্টু রাতের আঁধারে বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে তারা সীমান্ত থেকে এসব চিংড়ী রেণু পোনা নিয়ে পৌঁছে দেয় নির্দিষ্ট স্থানে।
সূত্রটি আরো জানিয়েছে, ভারত থেকে গলদার রেণু পোনার নাম কের নিয়ে আসছে নিম্নমানের (নোকলি) বাগদার রেণু। যার প্রতি বলের দাম চার থেকে ৫ লাখ টাকা।
ভারতীয় এসব রেণু পোনা সাতক্ষীরা জেলাসহ খুলনার ডুমুরিয়া, পাইকগাছা, বাগেরহাটের ফকিরহাটের ফলতিতা, রামপালের ফয়লা, মোংলা, মোড়েলগঞ্জ, শরণখোলা বিভিন্ন বাজারে সরবরাহ করাহয়। দেশি হ্যাচারির পোনাও ভারতীয় এসব পোনার কাছে টিতে পারছে না।
অভিযোগ রয়েছে, কুলিয়ার পোনা বাজারের প্রতিটি ঘরসহ হ্যাচারি মালিকরা প্রতারণা করে ভারতীয় পোনাকে দেশের নদ-নদীর মাছ বলে চিংড়ি চাষিদের কাছে বিক্রি করছেন। বেশির ভাগ পোনা ঘেরে ছাড়ার পরেই মারা যাচ্ছে। আবারও পোনা ছাড়তে হচ্ছে। এর ফলে যেমন উৎপাদন খরচ বাড়ছে, তেমনি উৎপাদনও কম হচ্ছে।
জানা যায়, খুলনার বাগেরহাট ও সাতক্ষীরায় দেশের সবচেয়ে বেশি গলদা ও বাগদা চিংড়ির চাষ হয়। এসব এলাকায় প্রতিবছর কয়েক কোটি রেণু পোনার চাহিদা থাকে। কিন্তু প্রাকৃতিক উৎস যেমন নদ-নদী, খাল-বিল থেকে রেণু পোনা আহরণ নিষিদ্ধ থাকায় হ্যাচারির রেণু পোনার উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন চাষিরা। চাষিদের সঙ্গে প্রতারণা করে ভারতীয় অপুষ্ট ও গুণগত মানহীন পোনা তুলে দেন অনেক হ্যাচারি মালিক ও রেণু পোনা ব্যাবসায়ীরা।
প্রাকৃতিক উৎস থেকে রেণু পোনা আহরণ সরকারিভাবে নইিষিদ্ধ। এই সুযোগটাকে কাজে লাগিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা ভারত থেকে আসা অপুষ্ট রেণু পোনা হ্যাচারির বলে চাষিদের কাছে বিক্রি করেন। যা ঘেরে ফেলার পর ভাইরাসসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে মরে যায়। ফলে কাঙ্ক্ষিত চিংড়ি উৎপাদন থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন মৎসচাষীরা।
এবিষয়ে সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আনিছুর রহমান জানান, ভারত থেকে আসা গলদ ও বাগদার রেণু পোনা সম্পূর্ণ অবৈধ। নিম্ন মানের ভারতীয় পোনায় চাষির ক্ষতিতে পড়ছেন। দেশীয় নদনদী থেকে মৎস্য পোনা আহরন সরকারি ভাবে নিশিদ্ধ হওয়ায় বেসরকারি ভাবে হ্যাচারিতে গলদা পোনা উৎপাদনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। ভারতীয় রেণু পোনার ব্যাপারে আমার সবসমসয় কাঠোর অবস্থানে রয়েছি। আমারা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি। ভারতীয় রেণু পোনা পরিহারে বিজিবি,প্রশাসন ও চাষিদের সহায়তা কামনা করেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা।