নিজস্ব প্রতিনিধি: সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপুরের কৃতি সন্তান মিজানুর রহমান (মধু) ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাহে রাজেউন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। তিনি দীর্ঘদিন দূরারোগ্য ব্যধি ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন। বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) বাংলাদেশ সময় রাত ৮টা ২৫ মিনিটে কানাডার টরোন্টো সিটিতে নিজস্ব বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যর পূর্বে তিনি একমাত্র পুত্র, স্ত্রী সহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন ও গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।
মিজানুর রহমান (মধু) এর বর্ণাঢ্য জীবন:
১৯৫৩ সালে মিজানুর রহমান (মধু) ব্রহ্মরাজপুরের ঐতিহ্যবাহী সরদার বাড়ী পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। তার পিতার নাম ছিলেন নজরুল ইসলাম (হারু সরদার)। সাত ভাই-বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়। শিক্ষা জীবন শেষে তিনি ১৯৮৪ সালে বিসিএস ক্যাডারে চাকরী পেয়ে প্রথমে রাজশাহী কালেক্টরটে যোগদান করেন। এরপর ঢাকার বিসিএস এ্যাডমিনিষ্ট্রি একাডেমিতে গবেষণা কর্মকর্তা হিসাবে যোগ দেন। পরে তিনি শিক্ষা মন্ত্রনালয়ে সিনিয়র এ্যাসিসটেন্ট সেক্রেটারী পদে যোগ দেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে পররাষ্ট্র সার্ভিসে বাহরাইনে ফাস্ট সেক্রেটারী পদে যোগদান করেন। পরে তিনি আমেরিকা থেকে প্রশাসনের উপর উচ্চতর ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর তিনি দেশে ফিরে আসলে বিএনপি’র জোট সরকার তার পদায়ন আটকে রাখে। আওয়ামী লীগ সরকার আমলে গুরুত্বপূর্ন পদে দায়িত্ব থাকায় তার সাথে বিমাতাসূলভ আচরণ শুরু হয়। পরবর্তীতে তিনি মনের কষ্টে অভিমান করে চাকরি ছেড়ে দিয়ে স্ত্রী-পুত্র নিয়ে আমেরিকা পাড়ি জমান। সবশেষে তিনি কানাডার টরোন্টো সিটিতে স্থায়ী বসবাস শুরু করেন। তিনি কানাডার কয়েকটি খ্যাতনামা কোম্পানিতে চাকরী করেছেন।
মিজানুর রহমান (মধু) এর বড় বোন হোসনে আরা বানু সাতক্ষীরা জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি। তার সেজো ভাই মমিনুর রহমান মুকুল ডিবি ইউনাইটেড হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ও ‘মা’ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান। ছোট ভাই মিলন ঢাকার একটি দেশের বিখ্যাত বে-সরকারী কোম্পানীর উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা।
তার চাচা বীর মুক্তিযোদ্ধা এস,এম শহিদুল ইসলাম বর্তমানে ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়নের নির্বাচিত চেয়ারম্যান। মিজানুর রহমানের দাদা মরহুম মোহাম্মদ হোসেন ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়নের এক টানা পাঁচবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন।
১৯৭১ সালে পাক হানাদার বাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করার অপরাধে মিজানুর রহমানের পিতা মরহুম নজরুল ইসলাম হারুকে ধরে নিয়ে সাতক্ষীরা সদরের মাহমুদপুর এলাকায় ব্যাপক অত্যাচার ও নির্যাতন চালায়। তাকে মৃত ভেবে হানাদার বাহিনী ফেলে রেখে যায়।