আক্তারুল ইসলাম:
নাম তুলি সাধু ছোট বেলা থেকে ছবি আঁকার অদম্য আগ্রহ ছিল তার। পড়া-লেখার পাশাপাশি ছবি আঁকার ছিল তার নেশা। বর্তমানে সে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারু-কলা স্কুলএর ড্রইং এন্ড পেইন্টিং ডিসিপ্লিনের ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে এমএফএ(মাস্টার্স)শ্রেণীতে অধ্যয়নরত আছেন। একই বিশ্ববিদ্যালয়ের একই বিভাগ থেকে ২০১৯ সালে বিএফএ (অনার্স) প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকার করে অনাবদ্য সাফল্যের কৃতিত্ব দেখিয়েছেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ে একাধিকবার মেধাবৃত্তি প্রাপ্ত হয়েছেন তা ছাড়া খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় চারু-কলা স্কুল থেকে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিএফএ(অনার্স)কোর্সে সর্বোচ্চ সিজিপিএ ৩.৮১ পেয়ে ড্রইং অ্যান্ড পেইন্টিং ডিসিপ্লি¬ন থেকে সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন প্রদত্ত “প্রধানমন্ত্রীর স্বর্ণপদক ২০১৯”এর জন্য মনোনীত হয়েছেন। তার গ্রামের বাড়ি খুলনার দৌলতপুরের পাবলা বনিকপাড়ায়। স্কুল জীবন শুরু হয়েছে দৌলতপুর সবুজ সাথী প্রিক্যাডেট এন্ড হাইস্কুল থেকে। মাধ্যমিক(এস.এস. সি)পাস করেছে ২০১৩ সালে দৌলতপুর মুহসিন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় থেকে, উচ্চমাধ্যমিক ( এইচ.এস.সি) পাস করেছে ২০১৫ সালে স্থানীয় বিএল কলেজ থেকে, সাফল্যের সাথে সকল পরীক্ষায় উর্ত্তীন্ন হয়েছে। তার পিতার নাম- শ্যামল চন্দ্র সাধু একজন ব্যবসায়ী,মাতা সাধনা সাধু একজন গৃহিণী। পিতা-মাতার চার কন্যা সন্তানের মধ্যে কনিষ্ঠ তুলি। ছবি আঁকা, বই সংগ্রহ, ভ্রমণ, ফটোগ্রাফি তার প্রিয় শখ। শৈশব থেকেই ছবি আঁকার প্রতি অদম্য আগ্রহ ও কৌতূহল ছিল তার। পিতার অনিচ্ছা সত্ত্বেও ছোট বেলা থেকেই পড়ালেখার পাশাপাশি ছবি আঁকিবুঁকি করতেন। স্কুলে পড়া লেখাকালীন সময়ে বিভিন্ন প্রতিযোগীতায় ছবি আঁকার জন্য একাধিকবার পুরস্কারপ্রাপ্ত হয়েছেন। এছাড়া তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে কচুরিপানা থেকে তৈরিকৃত ক্রাফট পেপার প্রকল্পের “কালারস অফনেচার” শীর্ষক একটি ভার্চুয়াল আর্টকম্পিটিশন ২০২০, ২য় স্থান অধিকার করে পুরস্কার প্রাপ্ত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েক বার বার্ষিক চিত্রকলা প্রদর্শনী সহ সম্প্রতি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত “২৪তম জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনী ২০২১” করোনা চারা গাছ ও অবরূদ্ধ শিরোনামে দুইটি চিত্র কর্ম প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ঢাকার রমনা সেগুনবাগিচায় প্রদর্শনী চলবে ২৯ জুন থেকে ৩১ জুলাই ২০২১ পর্যন্ত। শিল্পী হিসেবে তুলি প্রথম বারের মত শিল্পের যথার্থ মর্যাদা পেয়েছেন।“তুলি” নামকরনের সার্থকতায় একনিষ্ঠ অধ্যাবসায় এ শিল্পকে দেশ-বিদেশে এগিয়ে নিয়ে যেতে চান তিনি। রং তুলির বলিষ্ঠ আচড়ে সামাজিক প্রতিবন্ধকতার নানা দিক তুলে ধরতে চান তার শিল্পকর্মে। একজন সৎ ও আদর্শবান মানুষ হয়ে ভবিষ্যতে আরও সাফল্য অর্জন করে দেশ বরেন্য শিল্পী হতে চান তুলি। তাছাড়া একজন শিল্পী হিসেবে তিনি বলেছেন, আমার জন্য শিল্প একটি আত্মার অনুভূতি। রঙ এবং রেখা গুলি হৃদয়ের অন্তনিহিত অন্তরের অনুভূতি প্রকাশ করে যা শিল্পী হিসেবে আমার পরিচয় বহন করে। শিল্প কেবল ব্যক্তিগত জীবন নয়,মানবিক, ধর্মীয়়, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সংস্কৃতিক ক্ষেত্রে ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।শিল্পী হিসাবে আমি শিল্পকে মনে করি শিল্প হল রাষ্ট্রের পরিচায়ক, প্রেমের যাত্রা, আত্মার জাগরণ ,নান্দনিকতা ,শিল্পের মধ্যে খুঁজে পাই জীবনের আনন্দ, দুঃখের অবসান,কল্পনার বাস্তব রূপ। আমি এই সত্যকে বিশ্বাস করি “জীবন ছোট, শিল্পদীর্ঘ।
আক্তারুল ইসলাম সাতক্ষীরা-০১৭১৬০০২৩৯১