সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার সদর উপজেলার ধুলিহর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, বিধিবহির্ভূত কর্মকান্ড ও কোচিং বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে প্রতিকার চেয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির কাছে লিখিত অভিযোগ করার পর তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও তদন্ত কমিটির নিকট যথাযথভাবে তথ্য প্রমাণসহ উপস্থাপন না করা এবং তদন্ত কাজে বিঘœ সৃষ্টি করায় সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুস সালামকে ১৬ আগস্ট ২০২২ তারিখ হতে ২ মাসের জন্য সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
অভিযোগকারীরা হলেন ধুলিহর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের অভিভাবক সদস্য মো. জাহারুল ইসলাম, মো. আজারুল ইসলাম, শেখ আব্দুল হামিদ ও মো. আনিসুর রহমান। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ধুলিহর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালাম দীর্ঘদিন ধরে স্কুল ম্যানেজিং কমিটিকে তোয়াক্কা না করে ইচ্ছেমতো অনিয়ম-দুর্নীতি করে চলেছেন। এমন কি স্কুলের বিভিন্ন তহবিল থেকে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে থাকেন। সরকারের নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে স্কুলের শতাধিক শিক্ষার্থীকে নিজের বাড়িতে প্রাইভেট পড়াচ্ছেন। এছাড়া বিগত চার বছর যাবৎ বিদ্যালয়ের আয়-ব্যয়ের হিসাব কারও কাছে উপস্থাপন না করে সম্পূর্ণ গোপনীয়ভাবে নিজেই পরিচালনা করেন। অভিযোগ রয়েছে ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাৎ, সরকারি বই স্কুলের শিক্ষার্থীসহ বহিরাগতদের কাছে বিক্রি করা এবং চতুর্থ শ্রেণির দুইজন কর্মচারী নিয়োগের মাধ্যমে ২০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন প্রধান শিক্ষক।
এদিকে প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালামের বিধি বহির্ভূত দায়িত্ব পালনের বিষয়ে গত ২৭ জুলাই ২০২২ তারিখে দুর্নীতি দমন কমিশনের পরিচালক (বি:অনু: ও তদন্ত-২) স্বাক্ষরিত পত্রে দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. সাইফুল ইসলামকে তদন্তপূর্বক ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন প্রেরণের জন্য বলা হয়।
ধুলিহর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুস সালামের বাসায় কোচিং করানোর বিষয়ে সরেজমিনে গিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার বাসায় ছাত্রছাত্রীরা কোচিং করে, সেটা আমার ছেলে পরিচালনা করে। আমি পড়ায় না। এছাড়া অন্যান্য অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক বলেন, আমার বিরুদ্ধে সেসব অভিযোগ করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমাকে ফাসানোর চেষ্টা করছে।
এ ব্যাপারে ধুলিহর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি এসএম. মাহাবুবুর রহমান বলেন, তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও প্রধান শিক্ষক তাদের নিকট কোন তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানান। সঠিকভাবে তদন্তের স্বার্থে ১৬ আগস্ট ২০২২ তারিখ হতে ২ মাসের জন্য তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
পূর্ববর্তী পোস্ট