ফিরোজ হোসেন, সাতক্ষীরা : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, প্রশাসনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারের যে প্রেতাত্মারা বসে আছে, তাদেরকে অপসারণ না করা পর্যন্ত নির্বাচনের জন্য ধৈর্য ধারণ করতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত দেশ পুনর্গঠন না হবে ততদিন পর্যন্ত আমরা অন্তবর্তীকালীন সরকারকে সময় দিয়ে সহযোগিতা করতে চাই। দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে দেশের মানুষের উপর গুম-খুন, মিথ্যা মামলা ও নির্যাতন চালিয়েছে আওয়ামী স্বৈরাচার সরকার। আমরা শহীদ পরিবারের মাঝে যে সহযোগিতা দিয়েছি তা অব্যাহত থাজবে।
শনিবার (২৪ আগস্ট) সকালে সাতক্ষীরা শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে জেলা জামায়াতের আয়োজিত বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে দোয়া ও শহীদ পরিবারের মাঝে নগদ অর্থ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, দেশ ও জনপদকে মুক্ত করতে যারা জীবন দিয়ে শহীদ হয়ে গেলেন, তারা আমাদের জাতীয় বীর। এখন রাষ্ট্রীয়ভাবে এসব শহীদদের বীর হিসেবে ঘোষণা করা উচিৎ। জামায়াতের পক্ষ হয়ে আমরা সেই দাবি জানাচ্ছি। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, খুনিদের বিচার অবশ্যই বাংলাদেশে হবে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যারা গণহত্যা পরিচালনা করেছেন তাদের বিচার এদেশের মাটিতে হবে। ইতোমধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিচারের কার্যক্রম শুরু করেছে, আমরা তাদেরকে সাধুবাদ জানাই। আন্তর্জাতিক আদালতেও ইতোমধ্যেই গণহত্যাকারী শেখ হাসিনাসহ তার সব দোসরদের নামে মামলা হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানের সময়ে ছাত্র-জনতাকে হত্যাকারীদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে।
তিনি বলেন, জুলুম নির্যাতনের পরেও জামায়াতের নেতারা ফাঁসির দড়িতে চুম্বন করে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের কাছে আপোষ করেননি, অথচ স্বৈরাচার শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। স্বৈরাচারের লোকজন হিন্দু ভাইদের ব্যবহার করে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করেছিল, কিন্তু দেশের ছাত্রজনতা সেটি নস্যাৎ করে দিয়েছে। জামায়াত ও শিবিরের নেতাকর্মীরা হিন্দু ভাইদের মন্দির, জমি জায়গা পাহারস দিয়ে শান্তির বাংলাদেশ বিনির্মানে কাজ করেছেন। কিন্তু বিগত দিনে আওয়ামী লীগের লোকজনই হিন্দু ভাইদের ঘরবাড়ি, জায়গা জমি দখল করে লুটপাট ও মন্দির ভাংচুর নির্যাতনের ঘটনা ঘটিয়েছে।
সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর মুফতি রবিউল বাশারের সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জামায়াতের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক, খুলনা মহানগরের সাবেক আমীর মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী, খুলনা অঞ্চলের সদস্য মাস্টার শফিকুল আলম, খুলনা জেলা আমীর ইমরান হুসাইন, জেলা জামায়াতের সাবেক সেক্রেটারি নুরুল হুদা, ইসলামি ছাত্র শিবিরের জেলা সভাপতি ইমামুল ইসলাম, শহর সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রমুখ । সমগ্র অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা আজিজুর রহমান।