মাহফিজুল ইসলাম আককাজ : “শুভ জন্মদিন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ” আজকের এই দিনে মুজিব তোমায় মনে পড়ে…। গণতান্ত্রিকভাবে জন্ম নেওয়া উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গৌরব ঐতিহ্য ও সংগ্রামের গৌরবোজ্জ্বল ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সকল নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের মুজিবীয় শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন জানিয়েছেন সাতক্ষীরা-২ আসনের বারবার নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি নৌ-কমান্ডো-০০০১ বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু, আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশ’ ইতিহাসে এই তিনটি নাম একই সূত্রে গাঁথা। মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশের স্বাধীনতা অর্জনে নেতৃত্ব দেয় আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগই একমাত্র দল, বাংলাদেশের ইতিহাসে টানা চার মেয়াদে সরকার পরিচালনার অভিজ্ঞতা রয়েছে। আওয়ামী লীগ মানেই বাঙালি জাতীয়তাবাদের মূল ধারা। আওয়ামী লীগ মানেই সংগ্রামী মানুষের প্রতিচ্ছবি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারবর্গ এবং জাতীয় চার নেতাসহ স্বাধীনতা সংগ্রামে সকল শহিদদের রুহের মাগফিরাত কামনা ও গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে এবং বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সমৃদ্ধি ও সাফল্য কামনা করে শুভেচ্ছা বাণীতে বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি বলেন, ২৩ জুন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন প্রগতিবাদী নেতাদের উদ্যোগে আহূত এক কর্মী সম্মেলনে পুরনো ঢাকার ঐতিহ্যবাহী রোজ গার্ডেনে বাঙালি জাতির মুক্তির বারতা নিয়ে এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা লাভ করেছিল। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বাংলাদেশ পরিচিত হয় অমিত সম্ভাবনার দেশ হিসেবে। সাংবিধানিক, শান্তিপূর্ণ ও সশস্ত্র সংগ্রামের অভূতপূর্ব সমন্বয় ঘটিয়ে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির হাজার বছরের স্বপ্ন-সাধনাকে সার্থক করে তোলেন। ১৯৭১-এর ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে গ্রেফতারের পূর্ব মুহূর্তে বঙ্গবন্ধু আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। তাঁর আহ্বানে বাঙালি জাতি ঝাঁপিয়ে পড়ে সশস্ত্র সংগ্রামে। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে আওয়ামী লীগের পরিচালনায় সংঘটিত মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জিত হয়। ১৯৭১-এর ১৬ ডিসেম্বর বিশ্বের মানচিত্রে সগৌরবে স্থান করে নেয় স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু আজীবন দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাবার সাধনা করেছেন। বাংলাদেশের যা কিছু অর্জন সব কিছু এসেছে আওয়ামী লীগের হাত ধরে।
মাত্র সাড়ে তিন বছরে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন সরকার শূন্য হাতে যুদ্ধবিধ্বস্থ দেশের পুনর্গঠন ও নতুন প্রশাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলার দুরূহ কর্তব্য সম্পাদনের পাশাপাশি অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রেও তাৎপর্যপূর্ণ সাফল্য অর্জন করেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালের ১৭ মে পিতৃ-মাতৃ, ভাই, স্বজন হারানোর বেদনা নিয়ে স্বদেশ ভূমিতে দেশে ফেরার পর থেকেই তিনি নিরলসভাবে দেশের অধিকারহারা মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য নিরবচ্ছিন্ন লড়াই-সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছেন।
মূলতঃ আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে জননেত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ফলে দেশে গণজাগরণের ঢেউ জাগে, গুণগত পরিবর্তন সূচিত হয় রাজনৈতিক আন্দোলনের, গণসম্পৃক্ততা বৃদ্ধি পায় সংগঠনের; দেশবাসী পায় নতুন আলোর দিশা। গণমানুষের মুক্তির লক্ষ্যে আন্দোলন-সংগ্রাম করার কারণে তাঁকে বারবার ঘাতকদের হামলার শিকার ও কারা নির্যাতন ভোগ করতে হয়েছে। কিন্তু বাংলার মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের সংগ্রামে তিনি আজো অবিচল থেকে নিরবচ্ছিন্ন প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, মানব কল্যাণ, জনগণের প্রয়োজনের সময়ে সাড়া দেওয়া, জনগণের চাওয়া-পাওয়া, আশা-আকাঙ্খা বুঝতে পারা, জনগণের মধ্যে আত্মনিবেদিত কাজ, আধুনিকতা, বিজ্ঞানমনস্কতা এবং অগ্রসর চিন্তা চেতনাই হচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রাণশক্তি। বাংলাদেশের হৃদয় থেকে উৎসারিত এই প্রাণশক্তিই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে জন্মলগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত এদেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দলের মর্যাদায় অধিষ্ঠিত রেখেছে। ঐতিহাসিক প্রয়োজনে জনগণের ভেতর থেকে গড়ে উঠেছে জনগণের রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। যার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটির ভূখন্ডের সীমানা পেরিয়ে এই উপমহাদেশের অন্যতম বৃহৎ এবং জনসমর্থনপুষ্ট অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক, মানব কল্যাণকামী রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তার পরিচিতি অর্জনে সক্ষম হয়েছে। বাংলাদেশের কাদা-মাটি গায়ে মাখা খেটে খাওয়া মানুষের কাফেলা হচ্ছে আওয়ামীলীগ। অতীতের মতো বাংলাদেশের ভবিষ্যত ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্যভাবে যুক্ত। স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতা, সর্বশেষ সামরিক স্বৈরশাসন থেকে গণতন্ত্রে উত্তরণের প্রতিটি অর্জনের সংগ্রাম-লড়াইয়ে নেতৃত্বদানকারী একটিই রাজনৈতিক দল, তা হচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। বাঙালী জাতির প্রতিটি অর্জনেরও দাবিদার প্রাচীন ও সুবিশাল এ রাজনৈতিক দলটি। পরাধীনতার শৃঙ্খল ছিন্ন করে হাজার বছরের কাঙ্খিত বাঙালি জাতির স্বাধীনতা লাভসহ সকল মহতী অর্জনের নেতৃত্বে ছিল জনগণের প্রাণপ্রিয় সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ; যার মহানায়ক ছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আজ তাঁরই সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা বাঙালি জাতির সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ রচনার আলোকোজ্জ্বল পথ তথা আর্থ-সামাজিক-সার্বিক মুক্তির লক্ষ্যে কাজ করে চলেছেন। জননেত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও সঠিক বুদ্ধিমত্তার কারণে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশের কাতারে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে স্বাধীনতার স্বপক্ষের জনগণকে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ও জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সকল উন্নয়নে শামিল হয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার আহবান জানান।
পূর্ববর্তী পোস্ট