মাহফিজুল ইসলাম আককাজ ঃ আজ জেলহত্যা দিবস। ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর চার
জাতীয় নেতাকে কারাগারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। জাতির পিতা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ’৭৫ এর ১৫ আগস্ট সপরিবারে হত্যার পর জাতির
ইতিহাসে ৩ নভেম্বর দ্বিতীয় কলঙ্কজনক অধ্যায়। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বীর
সেনানী ও চার জাতীয় নেতা সৈয়দ নজররুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, এএইচএম
কামারুজ্জামান এবং ক্যাপ্টেন মনসুর আলীকে এই দিনে ঢাকা কেন্দ্রীয়
কারাগারের অভ্যন্তরে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। জাতি আজ মুক্তিযুদ্ধের চার
জাতীয় নেতাকে যথাযথ শ্রদ্ধা প্রদর্শনের মাধ্যমে দেশের ইতিহাসের বর্বরোচিত
এই কালো অধ্যায়টিকে স্মরণ করছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন দল ও
সংগঠন স্বাস্থ্যবিধি মেনে সারাদেশে দিবসটি পালন করছে। দিবসটি উপলক্ষে
সাতক্ষীরা-২ আসনের সংসদ সদস্য নৌ-কমান্ডো ০০০১ বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর
মোস্তাক আহমেদ রবি বাণী দিয়েছেন। বাণীতে শহীদ জাতীয় চার নেতার স্মৃতির
প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদনসহ তাদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন।
বাণীতে বীর মুক্তিযোদ্ধা এমপি রবি বলেন, বঙ্গবন্ধু পাকিস্থান কারাগারে
বন্দি থাকাবস্থায় তাঁর অবর্তমানে ১৯৭১ সালে জাতীয় চার নেতা মুজিবনগর
সরকার গঠন, রণ নীতি ও রণ কৌশল প্রণয়ন, প্রশাসনিক কর্মকান্ড ও মুক্তিযুদ্ধ
পরিচালনা, কূটনৈতিক তৎপরতা, শরণার্থীদের তদারকিসহ মুক্তিযুদ্ধকে জনযুদ্ধে
পরিণত করতে অসামান্য অবদান রাখেন। জাতি তাদের অবদান চিরদিন শ্রদ্ধাভরে
স্মরণ করবে। এমপি রবি বলেন, কারাগারের নির্জন প্রকোষ্ঠে জাতীয় চার নেতা
হত্যাকান্ড ছিল বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার ধারাবাহিকতা। এ ঘৃণ্য
হত্যাকান্ডের মাধ্যমে স্বাধীনতার পরাজিত শক্তি, দেশ বিরোধী চক্র বাংলার
মাটি থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নাম চিরতরে মুছে ফেলে মুক্তিযুদ্ধের
চেতনা ধ্বংশ এবং বাঙ্গালি জাতিকে নেতৃত্ব শূন্য করার অপচেষ্টা চালিয়েছিল।
বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভার সবচাইতে ঘৃণিত বিশ্বাসঘাতক সদস্য হিসেবে পরিচিত
এবং তৎকালীন স্বঘোষিত রাষ্ট্রপতি খন্দকার মোশতাক আহমেদ এবং বঙ্গবন্ধুর
দুই খুনি কর্নেল (অব.) সৈয়দ ফারুক রহমান এবং লে. কর্নেল (অব.) খন্দকার
আব্দুর রশীদ জেলখানায় জাতীয় চার নেতাকে হত্যার এ পরিকল্পনা করেন। এ কাজের
জন্য তারা আগে ভাগে একটি ঘাতক দলও গঠন করে। এ দলের প্রধান ছিল রিসালদার
মুসলেহ উদ্দিন। কারাগারের অভ্যন্তরে এ ধরনের বর্বর হত্যাকান্ড পৃথিবীর
ইতিহাসে নজিরবিহীন। পঁচাত্তরের ৩ নভেম্বর কারাগারে নিহত জাতীয় চার নেতার
স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে এমপি রবি বলেন, জাতীয় চারনেতার
আত্মত্যাগ বাঙ্গালি জাতি চিরকাল শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে। বঙ্গবন্ধুর
অসমাপ্ত কাজ শেষ করতে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখার আহবান
জানিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা এমপি রবি বলেন, এটাই হোক জেল হত্যা দিবসের
অঙ্গীকার।
পূর্ববর্তী পোস্ট