নিজস্ব প্রতিবেদক প্রতিনিধি ঃ বকেয়া শত কোটি টাকা ফেরতের দাবিতে সাতক্ষীরায় বেসরকারি এনজিও সংস্থা ‘বরসা’র প্রধান কার্যালয় ঘেরাও করে অবস্থান কর্মসূচী পালন করেছে গ্রাহকরা। আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত টানা ৪ ঘন্টা ব্যাপী সাতক্ষীরার কয়েকটি উপজেলা থেকে আগত প্রায় ১ হাজার মানুষ ‘বরসা’ এনজিও ও তাদের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান চায়না বাংলা শপিং কমপ্লেক্সে এসে অবস্থান নেয়। এসময় তারা সাতক্ষীরা-যশোর মহাসড়ক অবরোধ করতে চাইলে পুলিশের বাধার মুখে তা পন্ড হয়ে যায়।
গ্রাহকদের অভিযোগ, বেশী সুদে টাকা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়েছে বরসা এনজিও। লাভের টাকা দূরে থাক, তাদের মূলধনও ফেরত দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ‘বরসা’ এনজিও স্বত্ত্বাধিকারী একেএম আনিসুর রহমান কয়েক মাস আগে মারা যাবার পর তার ভাই আশিকুর রহমান সংস্থাটি পরিচালনা করে আসছিলেন। কিন্তু দীর্ঘদিন যাবত গ্রাহকদের কোন লভ্যাংশ দেননি তিনি। এক সময় গ্রাহকরা মূলধন ফেরত চাইলেও তা দিতে ব্যর্থ হন তিনি। বেশ কয়েকবার তিনি টাকা দেওয়ার জন্য তারিখ দিয়ে আসছিলেন। ২০২১ সালের ২০ মার্চ তারিখে একবার বরসার কালিগঞ্জের অফিস ঘেরাও ও ভাংচুর করেছিলেন গ্রাহকরা। এরপর চলতি বছরের ২২ জানুয়ারি হাজার হাজার গ্রাহক কালিগঞ্জে বরসার অফিস ঘেরাও করে। কিন্তু এরপরও কোন সুরাহা হয়নি।
এদিকে, কয়েকমাস যাবত পলাতক রয়েছেন ‘বরসা’ এনজিও’র বেশ কয়েকজন এরিয়া ম্যানেজার। স্থানীয়দের দাবি, ভারতে কৌশলে পালিয়ে গেছেন তারা। এরা হলেন, কালিগঞ্জের বদরতলার তুষার সাহা ও কুশল মন্ডল, রতনপুরের মৃনাল কান্তি ঘোষ, শ্যামনগরের ভেটখালীর নির্মল কুমার ঘোষ ও একই উপজেলার নাকতাড়া এলাকার স্বপন হালদার।
‘বরসা’র নির্বাহী পরিচালক আশিকুর রহমান জানান, গ্রাহকদের টাকা পরিশোধের লক্ষ্যে ইতিমধ্যে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে। স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি করে গ্রাহকদের টাকা পরিশোধ করা হবে। এনিয়ে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সাথে কথাও হয়েছে।
সাতক্ষীরা সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক তারিক ইবনে আজিজ জানান, অবস্থান ধর্মঘট চলাচলে জান-মালের নিরাপত্তা রক্ষায় পুলিশ উদ্যোগ নিয়েছিল। বেলা তিনটার দিকে দেবহাটার কুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুল হক ঘটনাস্থলে এসেছিলেন। তিনি এসে সংক্ষুব্ধদের সামনেই জেলার উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের কাছে ফোন করেছিলেন। একপর্যায়ে টাকা ফেরত পাওয়ার আশ^াস পেয়ে সংক্ষুব্ধরা বাড়িতে চলে গেছেন। ##