সাতক্ষীরা প্রতিনিধি ঃ সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আখড়াখোলায় এক ফল ব্যবসায়ীর পুত্রের কাছ থেকে এ লাখ টাকা ছিনতাই, হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় কুিপয়ে জখম, দস্যুবৃত্তি ও চাঁদা দাবীর ঘটনায় তিন জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো এক জনকে আসামী করে আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে। গত রবিবার (১৭ জুলাই) সাতক্ষীরার চীফ জুডিশিয়াল মাজিস্ট্রেট (আমলী আদালত-১) এ মামলাটি দায়ের করেন, সদর উপজেলার মোচড়া গ্রামের মৃত বাবুর আলী মোড়লের পুত্র ফলব্যবসায়ী আলী মোড়ল। আদালতের বিচারক মোঃ হুমায়ুন কবির মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ দিয়েছেন।
এ মামলার আসামীরা হলেন, সদর উপজেলার মুকুন্দপুর পূর্বপাড়া গ্রামের মৃত মোহাম্মদ আলীর পুত্র শেখ জিয়া ইসলাম (৪৪), একই গ্রামের ছালাম সরদারের পুত্র আবুল কালাম (৩৮) ও শেখ জিয়ার পুত্র মোঃ ইয়াছিন (২২)।
মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেছেন, উক্ত আসামীরা এলাকার চিহ্নিত ডাকাত, দস্যু, চাঁদাবাজ, অপহরনকারী, সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ী, মাদকাসক্ত ও আইন অমান্যকারী। অন্যদিকে, বাদী আলী মোড়ল আখড়াখোলা বাজারের একজন পাইকারী ও খুচরা ফল ব্যবসায়ী। আসামীরা বাদীর কাছে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবীসহ প্রতি হাট বারে তাদের চার খানা করে কাঁঠাল দিতে হবে বলে তারা জানায়। তা না দিলে বাদী ওই বাজারে ব্যবসা করতে পারবেনা বলে তারা আরো জানায়। আর ব্যবসা করলে খুন ও অপহরন করা হবে বলেও হুমকি দেয় তারা। বিষয়টি বাদী স্থানীয় বাজার কমিটি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানালে তারা তার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে গত ৭ জুলাই বিকাল ৪ টার দিকে ১ নং আসামী শেখ জিয়া ও ২ নং আসামী আবুল কালাম বাজারে এসে তার কাছে বলে আজই চার খানা কাঁঠাল দিবি এর বিনিময়ে তোর কোন টাকা দিতে পারবোনা। আর ১ লাখ টাকা চাঁদা চেয়েছিলাম দিস নাই বাজার কমিটির নিকট নালিশ করেছিস চাঁদার টাকা না দিলে তোকে ও তোর ছেলেকে তুলে নিয়ে খুন করে ফেলবো। বাদী এ সময় চাঁদার টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে তারা অকথ্য ভাষায় তাকে গালিগালাজ করে চলে যায়। এরপর গত ১৪ জুলাই বাদী স্থানীয় বল্লী কৃষিউন্নয়ন সমবায় থেকে তার ছেলে খায়রুল বাশারকে বিদেশ পাঠানোর জন্য এক লাখ টাকা লোন গ্রহন করেন। যার ডকুমেন্টও রয়েছে। বাদীর ছেলে খায়রুল উক্ত টাকা নিয়ে আসার সময় রাত সাড়ে ৮ টার দিকে আগে থেকেই আখড়াখোলা বাজারের হানাফি মসজিদের দক্ষিণ পাশে খালপাড়ে ওৎপেতে থাকা উক্ত আসামীরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে চাঁদাবাজি ও দস্যুবৃত্তি করার জন্য ধারালো দা, লোহার রড, দেশীয় পিস্তল ও অবৈধ অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অস্ত্রের মুখে তাকে জিম্মি করে তার প্যান্টের পকেট থেকে উক্ত টাকা ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এ সময় সে উক্ত টাকা দিতে না চাইলে ধস্তধস্তির এক পর্যায়ে তারা তার মাথায় আঘাত করে সজোরে কোপ মারলে তারে মাথার মাঝ বরাবর লেগে হাড়ভাঙাসহ গুরুতর জখম হয়। এক পর্যায়ে তারা তার কাছ থেকে টাকা গুলো ছিনিয়ে নেয়। এ সময় তার আতœচিৎকারে বাজারে আসা এ মামলার সাক্ষী নগরঘাটার জাহিদ হাসান, মোচড়ার গোলাম রসুল, ইয়ছিন বিশ^াসসহ স্থানীয়রা ছুটে আসলে আসামীরা তাকেসহ তার পরিবারের লোকজনকে খুন করার হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় খারুলকে পরে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে মিমাংসার চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়ায় পর গত ১৭ জুলাই তিনি আদালতে মামলা দায়ের করেন।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা সদর থানার ভাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স.ম কাইয়ুম জানান, ইতিমধ্যে তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তিনি আরো জানান, এ ব্যাপারে প্রয়োজীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে
পূর্ববর্তী পোস্ট