সাতক্ষীরা ট্রিবিউন ঃ
সাতক্ষীরার তালায় চুরির ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করে ইউপি সদস্য আমিনুর রহমানকে মিথ্যা মামলায় ফাসিয়ে হয়রানীর অভিযোগ উঠেছে নির্বাচনে পরাজিত প্রতিপক্ষদের বিরুদ্ধে। ঘটনা সূত্রে ও সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, তালা উপজেলার তেতুলিয়া ইউনিয়নের হাতবাস গ্রামের আফাজ মোড়লের পুত্র শামীম মোড়লের ঘর থেকে এক লক্ষ টাকা চুরি হয়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে তারা এলাকায় খোজ নিয়ে জানতে পারে একই এলাকার আজহারুল মোড়লের পুত্র রমজান মোড়ল (১৩) সুকৌশলে টাকাগুলো চুরি করেছে। এ ঘটনায় গত ৩০ নভেম্বর বুধবার দুপুরে ইউপি সদস্য আমিনুর রহমান ও স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে আজহারুল ও তার পুত্র রমজানকে ডেকে টাকা চুরির বিষয়টি জানতে চাইলে রমজান টাকা চুরি করেছে বলে অকপটে স্বীকার করে।
এক পর্যায়ে স্থানীয়রা এই টাকাগুলো কোথায় আছে জানতে চাইলে রমজান বলে আমার চাচা বারেক মোড়লকে ২০ হাজার টাকা, সোনা মোড়লের পুত্র শরিফুলকে ১০ হাজার টাকা, আজিজ মোড়লের পুত্র মুজাহিদকে ৩ হাজার টাকা, হাশেম মোড়লের পুত্র সুজনকে ৫ হাজার টাকা, বারেক মোড়লের পুত্র তুহিনকে ৩ হাজার দিয়েছি মর্মে সকলের সামনে সে স্বীকার করে।
এঘটনাটি ভিন্নখাতে নিতে ইউপি সদস্য আমিনুর রহমানের নির্বাচনী প্রতিপক্ষরা ষড়যন্ত্র শুরু করে। একপর্যায়ে রমজানকে নির্যাতনের মিথ্যা অভিযোগ এনে থানায় একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে আমিনুর রহমানকে পুলিশ দিয়ে গ্রেফতার করার অভিযোগ তুলেছে স্থানীরা। ঘটনাটি অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে অজানা চাঞ্চল্যকর সব
তথ্য।
যে মামলায় ইউপি সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে সেই মামলা সম্পর্কে বাদী কিছুই জানে না। অথচ রমজানের ভাই সুলাইমান কতৃক লোহার সিকল
দিয়ে বাধার দাগকে পুজি করে প্রতিপক্ষরা ঘোলা পানিতে মাছ স্বীকারের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
স্থানীয় শফিকুল ইসলাম জানান , রমজান আলী চুরি করেছে যা সে সকলের সামনে নিজে মুখে স্বীকার করেছে।
একই এলাকার তরিকুল ইসলাম বলেন, আমার ভাই শরিফুলকে চুরির এক লক্ষ টাকা থেকে ৫ হাজার টাকা ধার দেয় বলে সকলের সামনে রমজান স্বীকার করেন।
একই গ্রামের সুজনের মা জানান, আমার ছেলে রমজানের কাছ থেকে পাচশত টাকা ধার নিয়ে আবার তা ফিরিয়ে দিয়েছে।
আব্দুল মান্নান জানান রমজান আলী এলাকার বিভিন্ন গাছ থেকে সুপারি চুরি করার সময় ধরা পড়লে তার পিতা আজহারুল মোড়ল মদনপুর বাজারে রমজানকে কয়েক দিন বেধড়ক মারপিট করে। তার পরও রমজান এই অপরাধ মূলক কাজ হতে বিরত থাকেনি।
মদনপুর বাজারের ব্যবসায়ী মোস্তফা ডাবলু জানান, কয়েক মাস আগে রমজান আলী আমার দোকান থেকে ৪ /৫ শত টাকার মালামাল চুরি করে। তা সিসি ক্যামেরয় ধরা পড়লে রমজানের পিতা আজহারুল চুরিকৃত মালামালের সমপরিমাণ টাকা দিয়ে সে যাত্রায় রক্ষা পায়।
হাতবাস এলাকার মূদি দোকানদার মনিরুল সরদার জানান,এই রমজান আমার দোকানে প্রায়ই ৫ শত টাকার নোট নিয়ে আসে সিগারেটসহ বিভিন্ন মালামাল কিনতে। অথচ সে কোন কাজ করে না। কোথায় এত টাকা পায় সে?
এ বিষয়ে হাতবাস গ্রামের মোস্তফা মোড়ল বলেন, এই রমজানের বিরুদ্ধে তার চাচার বাড়ি থেকে টাকা চুরি, বিভিন্ন মানুষের বাগান থেকে সুপারি চুরির অভিযোগ রয়েছে। শামিমের বাড়ি হতে টাকা চুরি করেছে বলে আমাদের সামনে স্বীকার করে সে । তার বয়স ১২/১৩ বছর হলেও ২ টা ভিডিও ফোন ব্যবহার করতে দেখা যায় তার । এবিষয়টি নিয়ে তার বড় ভাই সুলাইমান মোড়ল লোহার সিকল দিয়ে বেধে রমজানকে বেধম মারপিট করেও চুরি থেকে বিরত রাখতে পারেননি তাকে। তিনি আরো জানান, রমজানের এতসব টাকার উৎস জানতে চাইলে সে আমাদের জানায়, জেন, পৈরীতে এসে আমাকে টাকা দিয়ে যায়।
এবিষয় রমজানের কাছে টাকা চুরির বিষয় জানতে চাইলে সে বলে,
আমাকে মারপিট করার কারনে ভয়ে চুরি করেছি বলে স্বীকার করি। দামী দামী ভিডিও ফোন ক্রয় করতে টাকা কোথায় পেয়েছো জানতে চাইলে সে বলে আমার ভাইয়ের টাকা চুরি করে কিনেছি।
এঘটনায় রমজানের পিতা আজহারুল মোড়ল বলেন, আমার বাড়ির সুপারি চুরি করে বিক্রি করেছে তাই আমি রমজানকে মারপিট করেছিলাম।
ইউপি সদস্য আমিনুর রহমানের ছোট ভাইয়ের বাড়ি থেকে তার ছেলে টাকা চুরির বিষয়টি নিয়ে মামলা করার বিষয় জানতে চাইলে আজহারুল ইসলাম জানান, আমি মামলা করেনি। পুলিশ সদর হাসপাতাল হতে আমাকে জোর করে একটা কাগজে সই করে নেই। তাতে কি লেখা তাও আমার জানা নেই।
এলাকাবাসী ঘটনাটি তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করতে প্রশাসনের উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।