রাহাত রাজাঃ দুধের তৈরি মিষ্টান্ন আমাদের কার না ভাললাগে। কোনো কোনো অঞ্চলে এসব
মিষ্টান্ন হয়ে উঠে ওখানকার ঐতিহ্য। এসব খাবার নিজ গুণেই একসময় সারা দেশে
ছড়িয়ে পড়ে তার সুখ্যাতি নিয়ে। সাতক্ষীরা তেমনই একটি জেলা। সাতক্ষীরার
মিষ্টির কথা উঠলেই সামনে চলে আসে ঐতিহ্যবাহী ফকির মিষ্টান্ন ভাণ্ডার,
সাগর সুইটস, ভাগ্যকূল মিষ্টান্ন ভাণ্ডার, জায়হুন, সাহা সুইটস্ সহ অসংখ্য
মিষ্টির শপের কথা।
সাতক্ষীরা মিষ্টান্নের এতো খ্যাতি দেশ ব্যাপি যে বিভিন্ন জেলাতেই
সাতক্ষীরা ঘোষ ডেইরি, আদি সাতক্ষীরা মিষ্টান্ন ভান্ডারসহ বহু নামে বেনামে
মিষ্টির দোকান রয়েছে। আবার প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন এলাকায় এসব দোকানের
সন্দেশ, সরপুরি, প্যাড়া ও দইসহ বিভিন্ন মিষ্টান্ন চলে যাচ্ছে।
স্বাদে, মানে ও গুণে অনন্য হওয়ায় সাতক্ষীরার সন্দেশ, সরপুরি, প্যাড়া ও
দইসহ বিভিন্ন মিষ্টান্নের চাহিদা দেশজুড়ে। সাতক্ষীরার ঐতিহ্যবাহী ফকির
মিষ্টান্ন ভাণ্ডার, সাগর সুইটস, ভাগ্যকূল মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের নামসহ
বিভিন্ন মিষ্টি তৈরীর দোকানগুলোতে উৎপাদিত রসমালাই, কুসুমভোগ, জামরুল,
গোলাপ জাম, মৌচাক মিষ্টিরও চাহিদা বেশ।
জানা গেছে, ১৯৬০ সালে গোলাম মোহাম্মদ ফকির আহমেদ নামে এক ব্যবসায়ী
সাতক্ষীরা শহরের শহীদ কাজল সরণিতে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ফকির মিষ্টান্ন
ভাণ্ডার। সেই থেকে আজ অবধি সুনামের সঙ্গে চলছে এই প্রতিষ্ঠানটি। সারাদেশে
এমনকি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও পরিচিতি রয়েছে ফকির মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের।
সাতক্ষীরার মানুষের দেখা পেলে ফকিরের সন্দেশের কথা শোনেন না, এমন মানুষ
পাওয়া কঠিন। আবার সাতক্ষীরা থেকে কেউ আসবে, এমন কথা শুনলে ফকিরের সন্দেশ
আনতে বলতেও ভোলেন না কেউ।
প্রায় সমসাময়িক সময়েই শেখ আব্দুর রশিদ নামে আরো একজন ব্যবসায়ী শহীদ কাজল
সরণিতে প্রতিষ্ঠা করেন হোটেল সাগর। ভারতসহ সারাদেশে পরিচিতি রয়েছে
সাগরেরও। সাগরের ক্ষেত্রেও সেই একই কথা প্রতিধানযোগ্য। সাগরের সন্দেশ বা
সরপুরির কথা যেন ভুলতে পারেন না কেউ। রেস্তোরাঁ ধাচ পাল্টে প্রায় ১৬ বছর
ধরে শুধু মিষ্টি উৎপাদন করছে এই প্রতিষ্ঠানটি। সেই সঙ্গে নামও পাল্টে
হয়েছে সাগর সুইটস।