নিজস্ব প্রতিবেদকঃ :সাতক্ষীরায় দীর্ঘ ১৫ বছরেও শেষ হয়নি বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হত্যা মামলা। বাদীর পরিবারকে হুমকী অব্যাহত। মামলার বিবরনে জানা যায় সাতক্ষীরা সদর উপজেলার গোবরদাড়ি সর্বকাশেমপুর গ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মাজেদ মাষ্টার এর পুত্র কলেজ পড়ুয়া মেধাবী ছাত্র মাষ্টার্স শেষ বর্ষ ও ল- কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র রাফেউজ্জামান (রাফে) হত্যা মামলার বিচারকার্য, আসামী পক্ষের কালো টাকা ও কুটকৌশলের কারণে বিচার কাজ নানা ভাবে বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছে। অপর দিকে আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং মামলার বাদী, স্বাক্ষী ও তাদের পরিবারে সম্পত্তি আত্মসাৎ, জবর দখল ও জীবননাশের হুমকি দিচ্ছে আসামীরা। মামলার আরজি সুত্রে আরো জানা যায় গত ২০০৬ সালে ২২ জানুয়ারী সকাল ১০.৩০ মিনিটে গোবরদাড়ী সর্বকাশেমপুর গ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মাজেদ মাষ্টারের কোবলাকৃত জমিতে গোবরদাড়ী গ্রামের মৃত. মতিয়ার রহমানের পুত্র হামিদুর রহমান ওরফে মনু (কাষ্টম) তার ভাই বদিয়ার রহমান (ভুলু) ও আলতাফ হোসেন (কিনা), মোজাম মোড়ল সহ ৪০ থেকে ৪৫ জন জমি দখলের উদ্দেশ্যে হামলা চালায় এতে বাঁধা দিতে গেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা মাজেদ মাষ্টার, তার ছোট ভাই আবু সাঈদ, ছোট পুত্র রাউফুজ্জামান সহ কয়েকজন আহত হয় এবং মেজ পুত্র রাফেউজ্জামান (রাফে) নিহত হয়। উক্ত ঘটনায় ২০০৬ সালের ২২ জানুয়ারী তারিখে মাজেদ মাষ্টার ২৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১২/১৩ জনের নামে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করে, মামলা নং – জিআর ২৮/২০০৬। পরবর্তীতে বাদী আরো ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে সম্পূরক এজাহার দাখিল করে। তখন তৎকালীন সদর থানা এএসপি সার্কেল ৩৯ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে চার্জশিট প্রদান করে। আসামী পক্ষ অনেকটা প্রভাবশালী হওয়ার কারণে মামলাটি সিআইডিতে হস্তান্তর করিয়ে নেয়। চার্জশিট দেওয়ার পর পি,পি, এ্যাড. তপন চক্রবর্তী, ২২/০৭/২০০৭ তারিখে এম,ই তে স্বাক্ষর করার পরপরই প্রশাসনের উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে মামলাটি সিআইডিতে চলে যায়। বাদীর একটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ২৫/০৮/২০১০ তারিখে ৩৯ জনের নামের চার্জশীট কে কার্যকর করার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রাণালয়ের ০১,০১১,০৩২,০২,০০,০১৭,০১০-৩৯৯/১ নং স্মারকের মাধ্যমে জেলা পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেয়। তারপরেও তৎকালীন সিআইডি পুলিশ পরিদর্শক মোঃ আমির হোসেন মন্ত্রণালয় থেকে আদেশ আসার পরে বুঝেশুনে প্রকৃত আসামীদের বাদ দিয়ে পিছনের তারিখ দেখিয়ে একই তারিখ ২৫/০৮/২০১০ তারিখে ১৪ জনকে আসামী করে দায়সারা চার্জশীট দেয়। পরবর্তীতে ২৭/০৯/২০১০ তারিখে বাদী আদালতে না- রাজি দিলে দীর্ঘদিন পর ২০১৫ সালে চীফজুডিশিয়াল ম্যাজিষ্টেট নিতাই চন্দ্র সাহা না রাজি শুনানী করে এবং সেটি খারিজ করে দেয়। পরবর্তীতে বাদি গত ২৮/০৬/২০১৫ তারিখে ক্রিমিন্যাল রিভিশন ৪৬২/১৫ দাখিল করে। সে মামলাটিও দীর্ঘ ৮ বছরেও শুনানী হয়নি। আর দীর্ঘদিন মামলা চালিয়ে বিচার না পেয়ে পুত্রশোকে রোগগ্রস্থ হয়ে অকালে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মাজেদ মাষ্টারের মৃত্যু হয়। বাদীর মৃত্যুর পর বাদীর পুত্র প্রধান স্বাক্ষী এখন মামলাটি পরিচালনা করছে। সে কারণে মামলার ১ নং আসামী হামিদুর রহমান ওরফে মনু (কাস্টম) বদিয়ার রহমান, আলতাফ হোসেন কিনা গংরা আইনকে তোয়াক্কা করছে না। প্রতিনিয়ত বাদীর পরিবার ও স্বাক্ষীদের নানা ভাবে মামলা, হামলা, সম্পত্তি দখলের চেষ্টা করে হয়রানী করছে। আর এ কারণে মামলার ১নং স্বাক্ষী রাউফুজ্জামান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা, আইনমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, জেলা প্রশাসক, জেলা জজ, জেলা পুলিশ সুপার সহ প্রশাসনের সকল মহলের সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন। মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি হলে এবং আসামীদের দ্রুত শাস্তি হলে একটি মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা ভাই হারার বেদনা ভুলে সুখি শান্তিতে বসবাস করতে পারে।