নিজস্ব প্রতিবেদকঃ : পবিত্র ঈদ উল ফিতরের স্বাস্থ্যবিধি না মেনে ঘরে ফেরা ও অনিয়ন্ত্রিত শপিংয়ের কারণে জেলা ব্যাপী কোভিড ১৯ বা নোভেল করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। চলতি মে মাসের ১৩ তারিখ থেকে ২১ মে পর্যন্ত আসা ফলাফলে এ পর্যন্ত ৮৫জন করোনাক্রান্ত হয়েছে। তবে এদের মধ্যে বেশির ভাগেরই বয়স ৩০-৪০ বছর। দ্বিতীয় স্থানে আছে ২০-৩০ বছর বয়সী তরুনরা। উল্লেখ্য এ পর্যন্ত সাতক্ষীরা জেলায় ১৪৫০ জন করোনাক্রন্ত হয়েছে।
নোভেল করোনা ঠেকাতে চলমান লকডাউন কাজে দিলেও সচেতনতার অভাবে জেলাব্যাপী বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্য। করোনার সেকেন্ড ওয়েভ শুরুর পরে চলতি মে মাসেই জেলায় সর্বোচ্চ শনাক্ত হয়েছে। এরমধ্যে গত ১৮ই মে ভারত ফেরত কোয়ারেন্টাইনে থাকা ১১জন সহ মোট ২১ জন করোনাক্রান্ত হয়েছে। তবে শনাক্তের হার ঈদের পর বৃদ্ধি পেলেও এখন স্থিতিশীল আছে। অনিয়ন্ত্রিত শপিং, স্বাস্থ্যবিধি না মানা ও অন্য জেলা থেকে সাতক্ষীরায় আগতদের জন্যই করোনাক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এদিকে মাঝ বয়সীরা করোনায় বেশি আক্রান্ত হয়েছেন। আবার মহিলাদের থেকে পুরুষের আক্রান্তের হার বেশি।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, চলতি মাসের ৯’মে তারিখে করোনা রিপোর্ট পজেটিভ আসে দুই জনের। তারা হলেন সাতক্ষীরা সদরের এস কে আজম, শ্যমনগরের লোকমান।
১০’মে পজেটিভ রোগীর সংখ্যা ১৩ জন। তারা হলেন সাতক্ষীরা সদরের মুনজিতপুরের কাজী মাশাদুল হক, কাজী মুশফিক সাদমান, ভবানিপুরের হাবিবুর রহমান, বিনেরপোতার নগেন্দ্র, মহানন্দ, পুরাতন সাতক্ষীরার আরিফুল, হারুন, লাবসার মুশাব্বির, দেবহাটার সাফুরা খাতুন, আতিয়ারা পারভিন, আশাশুনি গোদারার মুস্তাফিজুর, সেলিম রেজা পাড়, কালিগঞ্জের রাজাপুরের আমিনুজ্জামান।
১২’মে পজেটিভ রোগীর সংখ্যা ৬ জন। তারা হলেন, সাতক্ষীরা সদরের কামালনগর গ্রামের আনারুল, বালিথা গ্রামের মৃতুঞ্জয়, শম্পা ঘোষ, আশাশুনির বড়দলের মনিরা, দরগাপুরের সুলতান ও নলতার জামালউদ্দীন।
১৭’মে পজেটিভ রোগীর সংখ্যা ৮ জন। তারা হলেন, সাতক্ষীরা সদরের কামালনগর গ্রামের নাজমুন নাহার, পলাশপোলের আঃ আজিজ, ভোমরার আলমগীর কবীর, আশাশুনির উত্তর গোদারার শাইদা, আদালতপুরের সেলিনা, কালীগঞ্জের চম্পাফুলের হাফিজুল, পাটকেলঘাটার গোবিন্দ দাস, শার্শা গাজীপুরের সাদিয়া আফরিন।
১৮’মে পজেটিভ রোগীর সংখ্যা ২১ জন। তারা হলেন, সাতক্ষীরা সদরের মুনজিতপুরের রেজাউল, রহিমা খাতুন, মীর তাসনিম ইসলাম, শ্রীরামপুরের নাজমুজ্জামান, বৈকারীর সোনালী সুলতানা, কালিগঞ্জের চম্পাফুলের রুপা, রাজাপুরের আঃ রহিম ও শায়দা বেগম, জগন্নাথপুরের ওয়াজিদ মোড়ল, নিজদেবপুরের মোশাররফ হোসেন, শ্যামনগরের শ্রীনগরের দিপা মন্ডল, আশাশুনির সন্তোষ কুমার মন্ডল, আব্দুল মান্নান, পাটকেলঘাটার দিপীকা রাণী ঘোষ, বাগেরহাটের জিহাদ ইমরান, মনির মোল্লা, শাহিদা বেগম, খুলনার আক্তার, কাজি আশিকুজ্জামান ও রংপুরের কাকলি বেগম।
১৯’মে পজেটিভ রোগীর সংখ্যা ৮ জন। তারা হলেন, সাতক্ষীরা সদরের লাবসার রেহানা পারভীন, ছয়ঘরিয়ার আকবর আলী, আশাশুনির ফরিদা, মুকুল, তালার আফরোজা নাজনীন, কালিগঞ্জের আঃ রহমান, ওয়াজেদ আলী, শ্যামনগরের নওয়াবেকীর আলফা হাসিন।
২০’মে পজেটিভ রোগীর সংখ্যা ১২ জন। তারা হলেন, আশাশুনি উপজেলার কালিমাখালীর মিলন, গোদারার বাকী বিল্লাহ, শ্যামনগরের জগদীশ মন্ডল, অর্চনা রাণী মন্ডল, নওয়াবেকীর মোছলেম, তালবাড়িয়ার হৃদয় কুমার মন্ডল, কালিগঞ্জের মাহাবুবুর, ফেরদৌসী খাতুন, কলারোয়ার আঃ গফ্ফার, মিনাক্ষী, তালার দেব্রত ঘোষ, সদরের দেলয়ার হোসেন, ঝিনাইদহের আব্দুল হান্নান, বরিশালের মনোতোষ রায়।
২১’মে পজেটিভ রোগীর সংখ্যা ১৩ জন। তারা হলেন, সাতক্ষীরা সদরের ইটাগাছার শেখ আল আমিন, কাটিয়ার স্বপণ, আসুতোষ দাস, দেবহাটার আনোয়ার, তালার মুনমুন ঘোষ, পারভীন, আশাশুনির মোমেনা খাতুন, আঃ রাজ্জাক, কালিগঞ্জের পূর্ণিমা, শ্যামনগরের মাহমুদা, বাগেরহাটের মোড়েল গঞ্জের জিয়াদ ইমরান, নড়াইরের উর্মিলা, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শামসুন নাহার।
এদিকে আক্রান্তদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৫৩ জন পুরষ ও ৩২ জন নারী করোনা আক্রান্ত হয়েছে।
এর মধ্যে চার জনের বয়স ০ থেকে ১০ বছরের মধ্যে। চার জনের বয়স ১০ থেকে ২০ বছরের মধ্যে। ১৮ জনের বয়স ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। ৩৫ জনের বয়স ৩০ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে। বাকি ২৪ জনের বয়স ৪৫ থেকে ৭৬ বছরের মধ্যে।
এর মধ্যে চলতি মাসের ১৮’মে সাতক্ষীরায় ভারত ফেরত কোয়ারেন্টাইনে থাকা ১৫০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১১ জনের করোনা পজেটিভ ধরা পরে।
এদিকে জেলা যুবলীগের সাবেক আহবায়ক আব্দুল মান্নান করোনাক্রান্ত হয়েছেন বলে একটি সুত্রে জানা গেছে। তার পিসিআর ল্যাব রিপোর্ট না পাওয়া গেলেও এক্স-রেতে করোনার সংক্রমন ধরা পড়ে। তিনি বর্তমানে সাতক্ষীরা সিবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
সংক্রমন থেকে মুক্ত থাকতে বিনা প্রয়োজনে ঘরের বাইরে না থাকতেও যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
পূর্ববর্তী পোস্ট