আক্তারুল ইসলাম সাতক্ষীরা
সাতক্ষীরা আদালতে শত শত মামলা দাখিলের সময় কোর্ট ফি সঠিক বলে সেরেস্তাদাররা জানালেও এখন আদালত বলছে জাল কোর্ট ফি দিয়ে মামলা দাখিল হয়েছে। তাহলে এ দায়ভার কার ? মামলা খারিজের আশংখায় বিপাকে পড়েছে বিচার প্রার্থীরা। এঘটনায় দুই জন সেরেস্তাদার বাদী হয়ে সাতক্ষীরা সদর থানায় ৫টি মামলা দায়ের করেছে। জানাযায়, সাতক্ষীরা ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইবুন্যাল ০৭/০৯/২০২১ তারিখের আদেশ নম্বর ৬ এর মাধ্যমে সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারন সম্পাদককে অবহিত করা হয়েছে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইবুনালের অফিস সহকারী শহিদুল ইসলামকে ট্রাইবুন্যালে বিচারাধীন মামলায় জাল কোর্ট ফি সংশ্লিষ্ট মামলাগুলো তালিকা প্রস্ততি করার জন্য এবং মামলার সংশ্লিষ্ট আইনজীবী, মোহরারকে অবহিত করে ২ মাসের মধ্যে জাল কোর্ট ফির ব্যাখা এবং ২ মাসের মধ্যে সঠিক কোর্ট ফি মামলার নথিতে জমা দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইবুন্যাল বিচারক(যুগ্ম জেলা জজ) সাতক্ষীরা। যা ১২/০৯/২১ তারিখ ৮২ নং স্মারকে সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতিকে চিঠি দেওয়া হয়েছে । ২০১৬ ইং সাল হইতে ২০২১ ইং সাল পর্যন্ত সাতক্ষীরা জজ কোর্টের অধীনস্ত প্রায় এক হাজার মামলায় জাল কোর্ট ফি আছে মর্মে তালিকা প্রস্তুত করে বিভিন্ন নোটিশ বোর্ডে টানিয়ে দেওয়া হয়েছে।ইতি মধ্যে ০৮/০৯/২০২১ তারিখ আদেশ নং ৪ কলারোয়া সহকারী জজ কোর্টের দেওয়ানি ৫২/২০২১ মামলায় জাল কোর্ট ফি ১৫ কার্য দিবসের মধ্যে সঠিক কোর্ট ফি দেওয়ার নির্দেশনা দিয়ে ১৬/০৯/২০২১ ইং তারিখ ১০৯ নং স্মারকের একটি চিঠি সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য নূর মোহাম্মদ পেয়েছেন। বিজ্ঞ যুগ্ম জেলা জজ ১ নং আদালত সাতক্ষীরা মিস(বিবিধ) মামলা নং ১২/২০১৯ মামলা দাখিল করা হয় ২৪/০২/২০১৯ তারিখ।এই মামলায় দেখা যায় কোর্ট ফি সঠিক ও পর্যাপ্ত সিল আছে এবং এই মামলায় সেরেস্তাদারের সিল ও স্বাক্ষর আছে।একাধিক সূত্রে জানা যায়, কোর্ট ফি সঠিক আছে কি না তাহা পরীক্ষা করেন সেরেস্তাদাররা। কোর্ট ফি সঠিক থাকলে তখনি মামলা রুজু হয় ও রেজিষ্ট্রিভুক্ত এন্ট্রি হয় এবং মামলার নম্বর পড়ে। শত শত মামলা দাখিলের সময় সেরেস্তাদার কোর্ট ফি সঠিক ও পর্যাপ্ত আছে মর্মে রিপোর্ট দেওয়ার পর বিজ্ঞ কোর্ট মামলা গ্রহন করে থাকেন। তাহলে এখন কয়েক বছর পর কোর্ট ফি জাল বলা হচ্ছে, এ দায় কে নেবেন ? সঠিক এবং নতুন করে হাজার হাজার টাকার কোর্ট ফি বিচার প্রার্থীরা এখন কি ভাবে দিবেন। তারা রিতিমত হতাশ হয়ে পড়েছেন। বিষয়টি নিয়ে আইনজীবী, মোহরার এবং বিচার প্রার্থী মানুষের মধ্যে বাকবিতন্ড দেখা দিয়েছে। বন্যা,ঘুর্নিঝড়,বাঁধভাঙ্গা এলাকা সাতক্ষীরা জেলা। তারপর আবার করোনা মহামারি, শতশত মানুষ বেকার। মানুষের ঘরে খাবার নেই, মামলা চালানোর সমর্থ নেই। তারপর সেরেস্তাদারদের গাফিলতি ও ভুলের মাসুল দিতে হচ্ছে বিচার প্রার্থী মানুষদের।এই জাল কোর্ট ফির বিষয়ে ইতিমধ্যে সেরেস্তাদার রফিকুল ইসলাম সেরেস্তাদার মমতাজ বেগম বাদী হয়ে জি, আর-৪৫২/২০২১ জি, আর-৫৯৭/২০২১ মামলাসহ ৫টি মামলা সাতক্ষীরা সদর থানায় দায়ের করেছে। এই মামলাগুলোতে অজ্ঞাত নামা আসামী হলেও ইতিমধ্যে রাজিব বিল্লাহ নামে একজন স্টাম্প ভ্যান্ডার গ্রেফতার হয়ে সাতক্ষীরা জেল হাজতে আছে। এই ঘটনার পূর্বেও জাল স্টাম্প জাল কোর্ট ফি সংক্রান্তে মামলা হয় এবং স্টাম্প ভেন্ডার রবিউল ইসলাম, স্টাম্প ভেন্ডার শাহাজান আলী, স্টাম্প ভেন্ডার শওকত আলীসহ কয়েকজন গ্রেফতার হয়েছিল এবং তাদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। বার বার জাল স্টাম্প জাল কোর্ট ফি ধরা পড়ায় বিষয়টি নিয়ে সাতক্ষীরাবাসি হতাশায় ভুগছেন এবং সাতক্ষীরাবাসী জানতে চায় এর দায়দায়িত্ব কাদের ? মামলাগুলোর বাদীরা বহু কষ্ট করে তাদের জমি রক্ষা করার জন্য আইনজীবী, মোহরার,পেশকার কোর্ট সংশ্লিষ্ট অনেকের খরচের টাকা দিতে হয়। এখন জাল কোর্ট ফির কারনে মামলা নষ্ট বা খারিজ হয়ে যাবে। বিষয়টি মামলার বাদীর কি অপরাধ? জানতে চায় সাতক্ষীরাবাসী। দুর্নীতি দমন কমিশনসহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট সচেতন মহলের দাবী বিষয়টির জন্য কে বা কারা দায়ী তা খুজে বের করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরী।