শেখ কামরুল ইসলাম, সাতক্ষীরা: পবিত্র আশুরা উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় সাতক্ষীরা আল-রাজী পাঠাগার মিলনায়তনে পাঠাগারের পরিচালক আজহার আলী খানের সভাপত্বিতে ও হাফেজ শেখ কামরুল ইসলামের কোরআন তেলাওয়াতের মধ্যদিয়ে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। এসময় ১০ মহররমের তাৎপর্য ও গুরুত্ব শীর্ষক আলোচনা করেন মো. আজিজুল ইসলাম, আজহার হোসেন প্রমুখ। বক্তারা বলেন, পবিত্র আশুরা তথা হিজরী নববর্ষের প্রথম মাস মহররমের ১০ তারিখ। স্বৈরাচার, মিথ্যাবাদী ও জালেম শাসকের বিরুদ্ধে এক ঐতিহাসিক বিপ্লবের দিন। ৬১ হিজরীর এই দিনে অত্যাচারী শাসক ইয়াজিদের অন্যায়, অত্যাচার ও ইসলাম সম্পর্কে অপপ্রচারের প্রতিবাদ করতে গিয়ে সপরিবারে কারবালার ময়দানে শাহাদাত বরণ করেছিলেন হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর দৌহিত্র ইমাম হোসাইন (আ.)। ঐতিহাসিক বর্ণনায় জানা গেছে, ইয়াজিদ অন্যায়ভাবে ক্ষমতায় আরোহণের পর তার শাসন ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে নিজের মনমতো হাদিস ও ফতোয়া তৈরি করেন। তিনি একশ্রেণির আলেম নামধারী ব্যক্তিদেরকেও নানা পদ পদবীর লোভ দেখিয়ে তার শাসন ক্ষমতার পক্ষে ব্যবহার করেন। নিজের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে জাল হাদিস তৈরি করে প্রচার করতে থাকেন। সত্যপ্রিয় মানুষের উপর অন্যায়ভাবে জুলুম নির্যাতন চালাতে থাকেন। ইয়াজিদের অবৈধ শাসনের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলেই তাকে গ্রেফতার করা হতো, নির্যাতন চালানো হতো, অবশেষে হত্যা করা হতো। এসব অন্যায় জুলুমের প্রতিবাদে নবী মুহাম্মদ সা. -এর দৌহিত্র ইমাম হোসাইন (আ.) সোচ্চার ভূমিকা পালন করেন। তিনি জনগণকে ইয়াজিদের মিথ্যাচার ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান। হযরত ইমাম হোসাইন (আ.) তার পরিবারের সদস্যসহ সঙ্গী সাথীদের নিয়ে ইয়াজিদের অন্যায়ের প্রতিবাদে এগিয়ে আসেন। কুফার কারবালা নামক স্থানে আসলেই তাঁকে বাধা দেয়া হয়। তিনি এখানেই তাঁবু স্থাপন করেন। ইয়াজিদের নিযুক্ত কুফার গভর্নর ইবনে জিয়াদ ৯ই মহররম ইমাম হুসাইন (আ.)’র ছোট্ট শিবিরের ওপর অবরোধ জোরদারের ও হামলার নির্দেশ দেয়। এর আগেই আরোপ করা হয়েছিল অমানবিক পানি-অবরোধ। পশু-পাখী ও অন্য সবার জন্য ফোরাত নদীর পানি ব্যবহার বৈধ হলেও এ অবরোধের কারণে কেবল নবী-পরিবারের জন্য নিষিদ্ধ করা হয় এই নদীর পানি। ইয়াজিদ বাহিনীর সেনা সংখ্যাও ক্রমেই বাড়তে থাকে এবং দশই মহররমের দিনে তা প্রায় বিশ বা ত্রিশ হাজারে উন্নীত হয়। আর পক্ষান্তরে ইমাম হোসাইন (আ.) এর বাহিনীতে সদস্য সংখ্যা ছিল মাত্র একশ। ইয়াজিদের ক্ষমতার পক্ষে সমর্থন দেয়ার জন্য গবর্নর ইবনে জিয়াদ বার বার ইমাম হোসাইন (আ.) এর নিকট প্রস্তাব দেন। কিন্তু ইমাম হোসাইন রা. অন্যায়ের সাথে আপস না করে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেন।’ দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন আহমাদ আলী চৌধুরী।