নিজস্ব প্রতিবেদক: পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সাতক্ষীরার এসআই মাহবুবর রহমানের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্ব মূলক তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার অভিযোগ এনে আইজিপি কমপ্লেইন সেলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সাতক্ষীরার কর্মকাণ্ড বিতর্কিত হয়ে পড়ার অভিযোগে স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের তদন্তকারী কর্মকর্তারা পক্ষপাতিত্ব মূলক তদন্ত বা অনুসন্ধান প্রতিবেদন দিয়ে বাদী-বিবাদীদের ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এরকম বেশ কয়েকটি প্রতিবেদনের প্রদত্ত তথ্য পর্যালোচনা ও সরেজমিন অনুসন্ধান করে এর সত্যতা মিলেছে। দৈনিক আজকের সাতক্ষীরা ও ঢাকা থেকে প্রকাশিত নির্ভীক সংবাদ পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম কবীর -এর বিরুদ্ধে আদালতে অনুসন্ধান প্রতিবেদন দাখিল করলে বিষয়গুলো সামনে আসে।
জাহাঙ্গীর আলম কবীর উল্লেখিত পত্রিকার দুটির নির্বাহী সম্পাদক ও সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সদস্য ছাড়াও একজন পরিবেশ ও উন্নয়ন সাংবাদিক। তিনি ৪৪ বছর ধরে সাংবাদিকতা করছেন এবং সাংবাদিকতা বিষয়ের একজন প্রশিক্ষক। একাধিক পুরস্কার ও ফেলোশিপ লাভ করেছেন। এছাড়াও তিনি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি সাতক্ষীরা ইউনিট ও কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরির আজীবন সদস্য, জেলা সংস্কৃতি পরিষদের সদস্য এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ক্রিসেন্ট-এর সভাপতি। সাতক্ষীরা সদর উপজেলার দিগরডাঙ্গা আহলে হাদিস জামে মসজিদের প্রথম জমিদাতা। পরবর্তীতে এই মসজিদে রওশন আলী ও ওমর আলীও জমি দান করেন। কিন্তু ওমর আলী এই মসজিদের কিছু জায়গা দখল করে ঘরবাড়ি করে রেখেছেন। তিনি গত ২৫ বছর ধরে সরকারি বেসরকারি ও দাতা সংস্থার দেয়া দান অনুদান আনুমানিক অর্ধ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তার বড় ছেলে ওবাইদুল্লাহ নারী ঘটিত অসামাজিক কাজে লিপ্ত। এসব অপরাধের প্রতিবাদ করায় এবং বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় ওমর আলী সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম কবীর-এর নামে সাতক্ষীরা আমলী আদালত- ১-এ পেনাল কোডের ৩৮৫/৩৮৬/৩৪ ধারায় একটি চাঁদাবাজি মামলা করেন। মামলা নম্বর ৯১২/২২, তারিখ ১০/০৮/২২। মামলাটি আদালত নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য পিবিআই সাতক্ষীরাতে পাঠায়। এই চাঁদাবাজি মামলার তদন্তভার গ্রহণ করেন পিবিআই-এর এসআই মাহাবুবর রহমান (বিপি ৯০১৯২২২৮৯৮)। আর তদারকি করেন পিবিআই-এর পুলিশ সুপার মীর মোঃ শাফিন মাহমুদ।
এসআই মাহবুবুর রহমান মামলার বাদী ওমর আলীর দ্বারা প্রভাবিত হয়ে সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম কবীর-এর নামে একতরফা তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করে আদালতে পাঠান। এই প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা যায় মামলার মানীত ও নিরপেক্ষ সাক্ষীদের নাম ঠিকানা লেখা হলেও তাদের দেয়া সাক্ষীর বিবরণ তদন্ত প্রতিবেদনে লিপিবদ্ধ করা হয়নি। সংযুক্ত সকল সাক্ষীর বিবরণ একই রকম। কোন প্রকার পার্থক্য নেই। যা দেখলে সহজেই বোঝা যায় এসআই মাহাবুবর রহমান নিজেই তৈরি করে প্রতিবেদনের সাথে সংযুক্ত করেছেন। মামলার সাক্ষী ওবায়দুল্লাহ ও ওলিউল্লাহ ওমর আলীর দুই ছেলে। সাক্ষী ভ্যানচালক তোজাম্মেল হোসেন ওমর আলীর বিয়াই এবং অলিউল্লাহর শ্বশুর। নিরপেক্ষ সাক্ষী ইমরান হোসেন ও আব্দুর রহিমের জবানবন্দী নেয়া হয়নি। সাক্ষী আতাউর রহমান ও মোসলেম আলী সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম কবীর-এর বিরুদ্ধে সাক্ষী না দিলেও এসআই মাহাবুবর রহমান তাদের দেয়া জবানবন্দিতে তাকে জড়িয়েছেন। অজ্ঞাত কারণে তিনি প্রতিবেদনে লিখেছেন, সার্বিক তদন্তে প্রাপ্ত সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে বাদীর অভিযোগে বর্ণিত বিবাদী জাহাঙ্গীর আলম কবীরের বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ৩৮৫/৩৮৬/৩৪ ধারার অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
পিবিআই-এর এসআই মাহাবুবর রহমান এই পক্ষপাতিত্ব মূলক অনুসন্ধান প্রতিবেদন দেয়ায় জাহাঙ্গীর আলম কবীর তার বিরুদ্ধে ঢাকার আইজিপি কমপ্লেইন সেলে অভিযোগ করেছেন।