নিজস্ব প্রতিবেদকঃ সাতক্ষীরা পৌরসভার বর্ধিত পানির বিল প্রত্যাহার এবং রাস্তাঘাট-ড্রেনেজসহ বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের দাবীতে গণঅবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়েছে। সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির আয়োজনে বুধবার (১২ জুলাই) সকাল ১০টায় পৌরসভার সামনে উক্ত গণঅবস্থান কর্মসূচি পালিতম হয়। গণঅবস্থান থেকে আগামী ২৯ জুলাই পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ এবং ৩০ জুলাই পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
সংগঠনের আহবায়ক এড. শেখ আজাদ হোসেন বেলালের সভাপতিতে গণঅবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ আবু আহমেদ। এতে আরো বক্তব্য রাখেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা সুভাষ সরকার, এ্যাড. আবুল কালাম আজাদ, সুধাংশু শেখর সরকার, শেখ ওবায়দুস সুলতান বাবলু, কাজী আকতার হোসেন, আবুল হোসেন, নিত্যানন্দ সরকার প্রমুখ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন, আলী নুর খান বাবলু।
বক্তারা বলেন, কোন পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই সাতক্ষীরা পৌরসভার সরবরাহকৃত পানির বিল চারগুন বৃদ্ধি করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে পৌরসভার মেয়র, ভারপ্রাপ্ত মেয়রসহ পৌর পরিষদের সাথে একাধিকবার আলাপ-আলোচনাকালে অযৌক্তিকভাবে বৃদ্ধিকৃত বিল প্রত্যাহারের দাবী জানানো হয়। পৌর মেয়র নিজেও অযৌক্তিকভাবে বৃদ্ধিকৃত বিল প্রত্যাহারের আশ্বাস দেন। কিন্তু অদ্যবধি বিল প্রত্যাহার করা হয়নি। বক্তারা আরো বলেন, আধুনিকমানের সুযোগ সুবিধা সম্বলিত উন্নত নাগরিক সেবার মানোন্নয়নে সাতক্ষীরা পৌরসভার কোন সুদুর প্রসারি পরিকল্পনা নেই। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে চলাচলের সুবিধার্থে রাস্তাঘাট প্রশস্ত করা হচ্ছে না। বরং নতুন ভবন নির্মাণের সময় চলাচলের রাস্তা ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা দখল হয়ে যাচ্ছে। ব্যস্ততম শহরের কোথাও ফুটপাথ রাখা হচ্ছে না।
বক্তারা আরো বলেন, বাংলাদেশের মধ্যে সাতক্ষীরাই একমাত্র পৌরসভা- যেখানে আগে নিউমার্কেট ছিল এখন নেই। আগে পাবলিক অডিটরিয়াম ছিল এখন নেই। আগে পৌর মিলনায়তন ছিল এখন নেই। আগে শিশু পার্ক ছিল এখন নেই। আগে রাস্তায় ঝাড়–দার ছিল এখন নেই। আগে রাস্তার পাশে ফুটপাথ না থাকলেও সাধারণের চলাচলের পরিবেশ ছিল এখন নেই। আগে সুলতানপুর বড়বাজারে তরিতরকারী ব্যবসায়ীদের বসার জায়গা ছিল এখন নেই। তারা এখন রাস্তায় বসে। ইটাগাছা সান্ধ্য হাটের অস্তিত্ব বিলুপ্ত প্রায়। বিভিন্ন এলাকায় আগে পাবলিক টয়লেট থাকলেও এখন তার অধিকাংশই নেই। আগে ডাসবিন ছিল এখন নেই। রাস্তার পাশে পাকা পানির ট্যাপ ছিল এখন নেই। আগে রাস্তাঘাট ছিল এখন তার ছাল-চামড়া নেই। যানজট নিরসনে রাস্তায় ট্রাফিক দাড়ানোর জায়গা নেই। প্রাণ সায়র খালের প্রাণ নেই। দশ বছর পূর্বে সাতক্ষীরা শহর বাইপাস সড়ক নির্মিত হলেও শহরের সাথে যুক্ত লিঙ্ক রোডগুলো উপযোগী করে গড়ে না তোলার কোন উদ্যোগ নেই। শহরের যানজট নিরসনে প্রধান সড়কের সাথে অন্যান্য সড়কগুলোর পর্যাপ্ত লিঙ্ক রোড নির্মাণের উদ্যোগ নেই।
বক্তারা আরো বলেন, সাতক্ষীরা পৌরসভার সরবরাহকৃত পানি আগে শুধু ব্যবহার উপযোগীই ছিল না, তা শহরের লোকজন ছাড়াও ভ্যান-পিকআপ-ট্রাকযোগে বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে যেয়ে মানুষ পান করতো। কিন্তু এখন যে পানি সরবরাহ করা হয় তা পান করাতো দুরের কথা ব্যবহার উপযোগী নয়। অধিকাংশ গ্রাহক নিয়মিত পানি পান না। যেকারনে আগে পানির ১৬ হাজার গ্রাহক থাকলেও এখন তা কমে ১০ হাজারে এসে দাড়িয়েছে। বক্তারা পৌরসভার সকল সমস্যা সমাধানে এবং বর্ধিত পানির বিল প্রত্যাহারে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
পূর্ববর্তী পোস্ট