নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ ৫ বছর আগে সাতক্ষীরার সদরের কুচপুকুর
গ্রামের পরিবহন চালক ও বিএনপি কর্মী হুমায়ুন কবীরকে ঢাকা থেকে
তুলে এনে বাইপাস সড়কে ক্রসফায়ারের নামে গুলি করে হত্যার অভিযোগে
এবার সাবেক পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান, তৎকালিন অতিরিক্ত
পুলিশ সুপার ইলতুতমিশ, সাতক্ষীরা সদর থানার তৎকালিন ইন্সপেক্টর
(নিরস্ত্র) মহিদুল ইসলাম ও সাবেক পিপি এড. আব্দুল লতিফসহ ১৮ জনের
বিরুদ্ধে আদালতে হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। রবিবার দুপুরে সাতক্ষীরার
আমলি আদালত-১ এ মামলাটি দায়ের করেন সদর উপজেলার কুচপুকুর
গ্রামের মোক্তার আলীর ছেলে ও নিহতের ভাই আজগর আলী। আদালতের
বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নয়ন বড়াল মামলাটি তদন্ত
সপেক্ষে এজাহার হিসেবে গণ্য করার জন্য সাতক্ষীরা সদর থানার ওসিকে
নির্দেশ দিয়েছেন।
এ মামলার এজাহার নামীয় অন্যান্য আসামিরা হলেন, সাতক্ষীরা সদর
থানার তৎকালিন ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) শেখ সেকেন্দার আলী, সাতক্ষীরা জজ
কোর্টের সাবেক পিপি সদর উপজেলার কামারবাশা গ্রামের এড. আব্দুল
লতিফ, কুচপুকুর গ্রামের রফিকুল ইসলাম রফি, রবিউল ইসলাম, নবের
আলী, রনি, জনি, ইমামুল হক পলাশ, আনারুল ইসলাম, শিমুল,
বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের রবিউল ইসলাম, দেবনগরের মুনছুর আলী, হামজার
আলী, কুচপুকুরের সাইফুল ইসলাম, কাশেপুর গ্রামের
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, তৎকালীন সন্ত্রাসী ও আওয়ামীলীগ
নেতা নজরুল ইসলাম আতোতায়ীর গুলিতে নিহত হওয়ার পর এমামলার বাদী
আজগরি আলীসহ তার পরিবারকে গুম ও হত্যার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকে এ মামলার
আসামীরা। প্রাণভয়ে বাদীসহ তার ভাই হুমায়ন ঢাকায় চলে যান।
সেখানে হুমায়ন কবির গাড়ি চালিয়ে জীবন যাপন করতে থাকেন।
একপর্যায়ে ২০১৯ সালের ২৫ আগস্ট ঢাকা থেকে বিএনপি কর্মী হুমায়ন
কবিরকে সাবেক পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান, তৎকালিন অতিরিক্ত
পুলিশ সুপার ইলতুতমিশ, সাতক্ষীরা সদর থানার তৎকালিন ইন্সপেক্টর
(নিরস্ত্র) মহিদুল ইসলাম ও শেখ সেকেন্দার আলী অন্যান্য আসামীদের
ইন্ধনে ধরে নিয়ে আসেন। এরপর তাকে ছাড়ার জন্য ২০ লাখ টাকা চাঁদা
দাবী করেন এবং অজানা স্থানে নিয়ে তাকে শারিরীকভাবে নির্যাতন
করেন। একপর্যায়ে হুমায়ন কবিরের স্ত্রী চম্পা খাতুনের কাছ থেকে উক্ত
পুলিশ কর্মকর্তারা ৫ লাখ টাকা চাঁদা নেন। এরপরও তারা তাকে অজানা
স্থান থেকে ওই বছরের ৫ সেপ্টেম্বর ভোরে কাশেমপুর বাইপাস সড়কের
পাকা রাস্তার উপর তার পিঠের বাম পাশে ও বুকে গুলি করে হত্যা করে ফেলে
রেখে যায়। এরপর তারা হুমায়ন কবির ক্রসফায়ারে নিহত হয়েছে মর্মে
প্রচার দেন। ওইদিন বিকেলে সদর হাসপাতালের মর্গে ময়না তদন্ত শেষে
হুমায়ুন কবিরের মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
বাদী পক্ষের আইনজীবি আকম শামসুদ্দোহা খোকন বিষয়টি নিশ্চিত
করে জানান, ওই সময়কার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের কারণে আসামীদের
বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা সম্ভব না হওয়ায় রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
পরিবর্তণ হওয়ায় মামলাটি দায়ের করতে বিলম্ব হয়েছে। তিনি এসময়
বিচারবহির্ভুত হত্যাকান্ডে জড়িতদের উপযুক্ত বিচার দাবি করেন। ##
পূর্ববর্তী পোস্ট