নিজেস্ব প্রতিবেদনঃ শররের বাড়ির ছাদগুলো আস্তে আস্তে ভরে উঠছে বিভিন্ন ধরনের গাছের বাগানে। খুলনা শহরের বেশ কিছু বাড়ি ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা গিয়েছে।
বিভিন্ন ধরনের ফুল কিংবা মৌসুমি ছোট ফসলের উদ্যান দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন বাসা বাড়ির ছাদে। বিশেষ করে যে ধরনের গাছের শিকড় খুব বেশি গভীরে নয় এমন গাছগুলোই লাগানো হচ্ছে বিভিন্ন পদ্ধতিতে। কখনো টবে, কখনো বা ছাদে হালকা গভীর মাটি বিছিয়ে বিভিন্ন ধরনের স্ববজি চাষ করা হচ্ছে। শীতকালীন লালশাক, পুঁইশাক, পালংশাক, বরবটি, বেগুন, টমেটো, লাউ থেকে শুরু করে ছফেদা, কলা গাছ, লেবু, পেয়ারা, অ্যালোভেরা ইত্যাদি নানান রকমের উদ্যান তৈরি করা হচ্ছে।
জেসমিন আক্তার বীথি নামে খালিশপুরে একজন সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তির বাসার ছাদে এমন উদ্যানের দেখা মিলেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিঁনি বলেন, “নিজের অবসর যাপনের পাশাপাশি বাড়ির সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য এমনটা করে থাকি।”
স্ববজি ও ফলনশীল গাছের পাশাপাশি ফুলের চাষও করছে বহু বাড়িতে। আনজুমান আরা নামে পাশের অন্য বাড়ির একজন গৃহিনী বলেন, “নিজের হাতে চাষ করা স্ববজীর মাঝে আলাদা স্বাদ ও আনন্দ পাই। মাসুম, সুমাইয়া সহ কয়েকজন ছেলে মেয়ে আমাদের এমন কাজে সম্পৃক্ত হতে কইছিল। তারপর থেকে নিয়মিত ভাবে আমি আমার বাগানের পরিচর্যা করে যাচ্ছি।”
এ বিষয়ে খোজ নিয়ে দেখা গেছে অত্র এলাকার কয়েকজন তরুণ তরুণী মিলে এধরনের একটি উদ্যোগে মানুষকে সম্পৃক্ত হতে উৎসাহ যোগাচ্ছে। এম এম মাসুম বিল্যাহ নামে সরকারি ব্রজলাল কলেজ, খুলনার এক শিক্ষার্থী এবিষয়ে বলেন, ” করোনা কালে সুশীলন নামে একটি এনজিওর মাধ্যমে আমরা কয়েকজন ব্রিটিশ কাউন্সিলের একটি ট্রেনিং গ্রহণ করি। ট্রেনিং শেষ আমরা টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) -১৩ সম্পৃক্ত জৈব সারে ছাদ বাগান নামে একটি সামাজিক উদ্যোগ গ্রহণ করি এবং মানুষকে একাজে সম্পৃক্ত হতে উৎসাহ প্রদান করে যাচ্ছি।”
সুমাইয়া রহমান নামে অন্য একজন টিম মেম্বার বলেন, “এধরনের বাগান তৈরির জন্য গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে স্বদিচ্ছা। বাসা বাড়িতে তরকারি, ফলমূলের খোসা, ডিমের খোসা থেকে সহজেই জৈব স্যার প্রস্তুত করা যায়। এধরনের স্যার ব্যবহার করে গড়ে উঠা ছাদ বাগানের গাছগুলো একদিকে যেমন বীষমুক্ত অন্যদিকে পরিবেশ বান্ধব।”
আমরা কথা বলেছিলাম শাহিনা পারভিন নামে সুশীলন এর সহকারী পরিচালকের সাথে। তিঁনি জানালেন, “বাংলাদেশের একটি বিরাট সম্ভাবনা হচ্ছে যুবশক্তি। তাদেরকে যদি সমাজের ইতিবাচক পরিবর্তনের কাজে লাগানো যায়, দেশটা খুব সহজে উন্নত দেশের কাতারে পৌছে যাবে। সমগ্র খুলনাতে প্রায় পাঁচ শতাধিক যুবককে সুশীলন লীড বাংলাদেশ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন ধরনের সামাজিক উদ্যোগ গ্রহনের কাজে উৎসাহ প্রদান করছি, যারা মাসুমের মত বিভিন্ন ধরনের কাজে নিজেদের সম্পৃক্ত করে নিজেদের দক্ষতা উন্নয়নের পাশাপাশি সমাজের ইতিবাচক পরিবর্তনে ভূমিকা রাখবে বলে আশা রাখি।
এধরনের কাজ কে অনেক মহল থেকে সাদরে গ্রহণ করা হচ্ছে এবং যান্ত্রিক এই শহরে একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার উপায় হবে বলে অনেকে মন্তব্য করছেন।
সাতক্ষীরা ট্রিবিউন/ নাহিদ হাসান