নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরায় সাংবাদিক মোঃ শহিদুল ইসলাম ও তার পরিবারের উপর দফায় দফায় সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলায় শহিদুল সহ তার বড়ভাই, ভাবি, ভাইপো ও ভাইঝি গুরুত্বর আহত হয়েছেন। শহিদুল ইসলাম দৈনিক জন্মভূমি পত্রিকার সাতক্ষীরা প্রতিনিধি ও সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সদস্য। এছাড়াও তিনি জেলা কৃষক লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক। শনিবার (১৩ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় সদরের দহাকুলা, কুখরালী কাঁঠালতলা ও সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের গেটে তিন দফায় হামলা চালায় স্বশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। হামলার পর থেকে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে পরিবারটি। আহতরা হলেন, শহিদুল ইসলাম (৪৮), তার বড় ভাই নজরুল ইসলাম (৫৮), ভাইপো ফাহাদ ইসলাম আনান (৩২), ভাইঝি মেহেজাবিন ইসলাম তাহরিন (২১), ভাবি মুর্শিদা ইসলাম (৪৪)। এ ঘটনায় সাংবাদিক শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে সাতক্ষীরা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং- ১৯, তারিখ- ১৩/৪/২৪। এজাহার সূত্র ও ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানান, সাতক্ষীরা সদরের দহাকুলায় তাদের একটি ভাটা (ফ্যাশন ব্রিকস) ও প্রজেক্ট (ফ্যাশন পোল্ট্রি ফার্ম) রয়েছে। ঘটনার সময় একাধিক নাশকতা মামলার আসামী ও পুলিশের উপর হামলাকারী শহরের পার কুখরালী গ্রামের মৃত ইনসাফ আলী সরদারের ছেলে শাহিনুর রহমান (৫২), তার ভাই চিহ্নিত মাদক সেবনকারী ও ব্যবসায়ী তুহিনুর রহমান (তুহিন) (৪০), একই এলাকার আব্দুল মাজেদের ছেলে মুজিবর রহমানসহ (৫০) অজ্ঞাত ২০/২৫ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা বাশ, লোহার রড, হাতুড়ি, শাবল, দা নিয়ে অবৈধ ভাবে প্রজেক্টে প্রবেশ করে কর্মচারীদের খুন জখমের ভয় দেখিয়ে প্রজেক্ট থেকে বের করে দেয়। সংবাদ পেয়ে সাংবাদিক শহিদুল ইসলামসহ পরিবারের সদস্যরা সেখানে গিয়ে প্রতিবাদ করলে তারা পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক এলোপাতারী ভাবে হামলা করে ভুক্তভোগীদের আহত করে ও নারীদের পরনের কাপড়টেনে হেচড়ে শ্লীলতাহানী ঘটিয়ে ১এক লক্ষ টাকা দামের এক ভরি ওজনের সোনার চেইন, ৬০ হাজার টাকা মূল্যের আংটি ও নগদ ২০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। আহত হয়ে ভুক্তভোগীরা হাসপাতালে যাওয়ার সময় ঘটনাস্থল থেকে এক কিলোমিটার দূরত্বে কুখরালী কাঠালতলা মোড়ে তাদের ব্যবহারিত প্রাইভেট কার ((ঢাকা মেট্রো-ড-২৩-৯৪৯৩) পৌছালে অভিযুক্তরা আবারো সন্ত্রাসী হামলা করে প্রাইভেট কারটি ভেঙে চুরমার করে প্রায় ৫০ হাজার টাকার ক্ষতি করে। ভুক্তভোগীরা আরো জানান, হাসপাতাল যাওয়ার আগে আমরা থানায় গিয়ে নিরাপত্তা চাইলে পুলিশ আমাদের আগে চিকিৎসা নিয়ে পরে অভিযোগ দিতে বলে। আমরা হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে বের হতেই তারা আবার হামলা করে, পরে স্থানীয়রা বাধা দিলে ও পুলিশকে অবহিত করলে তারা চলে যায়।
এই ঘটনায় সাতক্ষীরা কৃষক লীগসহ বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নজরুল ইসলাম জানান, উভয়পক্ষের দুটি মামলা দায়ের হয়ে়ছে। এবং জিডির বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।
এদিকে, হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা হলেও একই ঘটনায় পরবর্তীতে তাদের পক্ষেও একটি মামলা রুজু হয়েছে সাতক্ষীরা সদর থানায়। মামলা নং- ২০। সাতক্ষীরার নামধারী চোরাকারবারী গোল্ড শহিদুল ওরফে গার্মেন্টস শহিদুল দিনভর তদবির করে থানায় মামলা করতে সহযোগিতা করেন বলে জানিয়েছেন ভূক্তভোগী পরিবার। প্রথম মামলায় কোন আসামি আটক না হলেও কাউটার মামলার আসামিদের খোঁজে পুলিশ তৎপর। গভীর রাতে সাংবাদিক শহিদুলের বাড়িতে যায় পুলিশ সদস্যরা।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার সুশীল সমাজ ও সাংবাদিকবৃন্দরা অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে জেলা পুলিশ সুপারের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।