ডেস্ক রিপোর্ট : হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে একটি রিসোর্টে অবরুদ্ধ থাকার পর ইতোমধ্যে মুক্ত হয়েছেন। মুক্তির পর তিনি তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এ পর্যন্ত কয়েকটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। সর্বশেষ ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেন, একটি মানবিক বিয়ের গল্প. হাফেজ শহীদ ভাইয়ের স্ত্রী যেভাবে আমার স্ত্রী হয়ে যায়। মামুনুল হকের স্ট্যাটাসটি লিঙ্ক সহ নিচে দেওয়া হলো :
হাফেজ শহিদুল ইসলাম আমার ঘনিষ্ঠ সহকর্মীদের একজন । সাংগঠনিক কাজে আমার দু-চারজন সহযোগীর অন্যতম । বেশ পুরোনো আমাদের সম্পর্ক । সম্পর্কের গভীরতা পারিবারিক পরিধি পর্যন্ত । পরিবারসহ একে অপরের বাসায় যাতায়াত আমাদের দীর্ঘদিনের । সেই সূত্রে তার পারিবারিক অভিভাবকত্ব করতাম আমি ।পারিবারিকভাবে খুঁটিনাটি বিষয়ে পরামর্শের জন্য তারা আমার দ্বারস্থ হত। দুই সন্তানের ছোট সংসার নিয়ে চলছিল তাদের জীবন । একটা পর্যায়ে এসে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে নানা বিষয় নিয়ে শুরু হয় মনোমালিন্য । মনোমালিন্য থেকে বাদানুবাদ এবং সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু ।
আজ থেকে তিন বছর আগের কথা । তখন তাদের সংসার টিকিয়ে রাখার জন্য অনেক চেষ্টা করেছি আমি । তাদের উভয়ের সাথে কথা বলি ।কিন্তু কোনভাবেই আর সেটি সম্ভব হয়নি । ছাড়াছাড়ি হয়ে যায় তাদের । ছাড়াছাড়ির পর দ্বিতীয় সংসার শুরু করেন হাফেজ শহীদুল ইসলাম । সেই বিবাহ আমি পড়াই । তিনি তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে সুখে শান্তিতে দিনাতিপাত করছেন । সেই ঘরে জন্ম নিয়েছে ফুটফুটে আরেকটি সন্তান । অপরদিকে হাফেজ শহীদ ভাইয়ের স্ত্রী হয়ে যায় অনেকটা অসহায় । এক রকমের কূলকিনারাহীন ।রাগের মাথায় সংসার ভেঙে গভীর সংকটে পড়ে যান তিনি । ওই পরিস্থিতিতে তার জীবিকা নির্বাহ করা কঠিন হয়ে পড়ে ।
স্বাভাবিক ভাবেই তিনি আমার শরণাপন্ন হন ।উদ্ভূত পরিস্থিতিতে করণীয় বিষয়ে পরামর্শ নেন । আর সেই দুঃসময়ে সহযোগিতা করার মত আমি ছাড়া আর কেউ ছিল না তার । ইসলামী দৃষ্টিকোণ এবং অভিভাবকত্বের জায়গা থেকে আমি তার অর্থনৈতিক দায়িত্ব গ্রহণ করি ।
জীবনের করণীয় বিষয়ে দিক নির্দেশনার জন্য নিয়মিতই আমার সাথে যোগাযোগ রাখতে হয় তাকে ।এমতাবস্থায় একজন বেগানা নারীর সাথে এভাবে সম্পর্ক রাখাকে শরীয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে আমার কাছে ঝুঁকিপূর্ণ মনে হয় । তখন আমি সিদ্ধান্ত নেই, যত দিন তার অভিভাবকত্বের প্রয়োজন হবে আমার, তাকে বেগানা হিসেবে রেখে অভিভাবকত্ব করবনা ,বরং ইসলামী শরীয়তের আলোকে বৈধ একটা সম্পর্ক তৈরি করেনিব । বিষয়টি নিয়ে ঘনিষ্টজনদের সাথে কথা বলি এবং এ বিষয়ে তাদেরকে জানিয়ে শরীয়তের বিধান অনুযায়ী বিবাহের কালেমা পড়ে বিবাহ করে নেই
দু বছর যাবত এভাবেই মানবিক ও ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে আমি তার অভিভাবকত্ব করছি এবং একজন অসহায় নারীর দায়িত্ব গ্রহণ করে একটি পুণ্যের কাজ করেছি বলে বিশ্বাস করি ।আমি যা বললাম এটা আল্লাহর নামের হাজার বার শপথ করে বলতে পারব ।বিষয়টি বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য কুল্লামার শপথ করতে পারি ।
বিষয়টি খোলাসা করার পরেও যুবলীগ আওয়ামী লীগের গুন্ডারা আমার সাথে যে অমানবিক আচরণ করেছে এবং হামলা করেছে, গায়ে হাত তুলেছে আমি এর বিচার চাই আল্লাহর কাছে প্রশাসনের কাছে এবং জনগণের কাছে ।পুলিশের উপস্থিতিতে তাদের এই হামলা ও আচরণ প্রমাণ করে বর্তমানে বাংলাদেশে মান-সম্মান কিংবা জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে চলাফেরা করা সম্ভব না ।