সাতক্ষীরা প্রতিনিধি ঃ সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের দুর্গাবাটিতে খোলপেটুয়া নদীর উপকুল রক্ষা বেঁড়িবাঁধ ভেঙে এ পর্যন্ত মোট ১০ টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিতে ভেসে গেছে হাজার বিঘা মৎস্য ঘের ও ফসলি জমি। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার পরিবার। ইতিমধ্যে প্লাবিত এলাকায় সুপেয় খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। পানিতে প্লাবিত হওয়ায় ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে রান্না ঘরসহ অনেকের কাঁচা ঘরবাড়ি। ভেঙে পড়েছে স্যানিটেশন ব্যবস্থা।
গত বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) রাতে প্রবল জোয়ারের চাপে পশ্চিম দুর্গাবাটির সাইক্লোনশ্লেটার সংলগ্ন এলাকায় খোলপেটুয়া নদীর ২০০ ফুট এলাকাজুড়ে উপকুল রক্ষা বেড়িবাঁধ ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। শুক্রবার ভাঙনকবলিত বেড়িবাঁধ সংস্কার করা সম্ভব না হওয়ায় ক্রমান্বয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান যেমন বাড়ছে, তেমনি সীমাহীন দুর্ভোগে পড়ছে উপকূলের মানুষ। জরুুর ভিত্তিতে বেঁড়িবাধ সংস্কার করা না হলে প্লাবিত হবে উপকুলীয় উপজেলা শ্যামনগরের নতুন নতুন এলাকা। তবে, বেঁড়িবাধ সংস্কারে ইতিমধ্যে পানি উন্নয়নের বোর্ডের সহযোগিতায় জনপ্রতিনিধিরা স্থানীয়রদের নিয়ে বাঁশ দিয়ে পাইলিং এর কাজ শুরু করেছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, দুর্গাবাটিতে খোলপেটুয়া নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে ইতিমধ্যে পশ্চিম ও পূর্ব পোড়াকাটলা, পশ্চিম ও পূর্ব দুর্গাবাটি, আড়পাঙ্গাশিয়া, বুড়িগোয়ালিনী, কলবাড়ি, দাতিনাখালী, মাদিয়া ও ভামিয়া গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
ইতিমধ্যে ভাঙনকবলিত বেড়িবাঁধ পরিদর্শন করেছেন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির, শ্যামনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস.এম আতাউল হক দোলন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহি প্রকৌশলী আবুল খায়ের, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আক্তার হোসেন, বুড়িগোয়ালিনী ইউপি চেয়ারম্যান হাজী নজরুল ইসলাম প্রমুখ।
ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন শেষে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, খুব শীঘ্রই ভাঙনকবলিত বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু হবে। দুর্যোগ কবলিত মানুষের সুপেয় খাবার পানির সংকট নিরসনে দুর্গাবাটিতে রিভার্স অসমোসিস প্লান্ট চালু করা হবে। এছাড়া পানিবন্দী ৩ হাজার পরিবারকে জরুরি খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হবে।
পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে বস্তা, দঁড়ি, বাঁশ ও পেরেক সরবরাহ করা হয়েছে। ৫৫০ ফুট এলাকায় পাইলিং করার জন্য কাজ শুরু করা হয়েছে।
পূর্ববর্তী পোস্ট