আক্তার হোসেন, তালাঃ
সাতক্ষীরায় বে-সরকারী উন্নয়ন সংস্থা(সাস) এর মাধ্যমে মাটির পুকুরে গলদার রেণু উৎপাদন ও গলদা চাষের নতুন সম্ভাবনার সুযোগ পাচ্ছে মৎস্য চাষীরা। ফলে তারা অনেক লাভবান হচ্ছে,এমনটায় জানিয়েছেন চাষীরা।
জানাযায়, পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)-এর অর্থায়নে ও কারিগরি সহযোগিতায় এবং সাতক্ষীরা উন্নয়ন সংস্থা (সাস)-কর্র্তৃক বাস্তবায়িত চৎড়সড়ঃরহম অমৎরপঁষঃঁৎধষ ঈড়সসবৎপরধষরুধঃরড়হ ধহফ ঊহঃবৎঢ়ৎরংবং (চঅঈঊ) প্রকল্পের আওতায় চলতি বছর মাটির পুকুরে গলদার পিএল (রেণু) উৎপাদন পাইলটিংটি হাতে নেওয়া হয়। বিগত বছরের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে চলতি বছরের শুরুতেই এ প্রকল্প হাতে নিয়ে টানা দুই মাসের কর্ম-প্রচেষ্টার মাধ্যমে এ ফলাফল পাওয়া যায়। পুকুরে ডিমওয়ালা মা গলদা চিংড়ি মজুদ পরবর্তী বিভিন্ন ধাপ অতিক্রম করার ৩৪ দিন পর গলদার পিএল সনাক্ত করা হয়। মাটির পুকুরে গলদার রেণু (পিএল)উৎপাদনের উদ্যোগটি অত্র এলাকার গলদা চিংড়ি চাষীদের জন্য সম্ভাবনার নতুন দ্বার উন্মোচন করেছে। এর ফলে চাষীদের হ্যাচারি বা নদীর পোনার উপর নির্ভরশীলতা কমে আসবে। চাষীরা তাদের নিজেদের প্রয়োজনীয় পিএল (রেণু) নিজস্ব ঘেরে বা পুকুরে উৎপাদন করতে পারবে এবং রেণু প্রাপ্তিতে যে দুর্ভোগ হতো তার লাঘব হবে। অনিয়মতান্ত্রিক ভাবে ভারত থেকে আসা নি¤œমানের গলদার রেণুর আধিক্য কমবে। উপযুক্ত পরিবেশে এই নতুন প্রযুক্তি সারা বছর ব্যবহার করা যাবে। ফলে গলদার উৎপাদন ও রপ্তানি বাড়বে বিশ^বাজারে। সেই সাথে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ভাবে সমৃদ্ধিশালী হবে এবং দেশে বেকারত্ব কমবে। ইতিমধ্যে সাস এই প্রকল্পটির ফলাফল অত্র এলাকার চাষীদের মাঝে ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে যেমন: মাঠদিবসের মাধ্যমে চাষীদেরকে জানানো, নতুন করে ১০ জন উৎপাদনকারী উদ্যোক্তা নির্বাচন, বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করা ইত্যাদি।
পিকেএসএফ এর পেইজ প্রকল্পের ভ্যালু চেইন প্রজেক্ট ম্যানেজার জনাব আল-ইমরান এর টেকনিক্যাল গাইড লাইন এবং সাসের এসইপি প্রকল্পের সমন্বয়কারী খান মোঃ শাহ আলম, পেইজ প্রকল্পের সমন্বয়কারী বিএম হাবিবুর রহমান, ভ্যালু চেইন ফ্যাসিলিটেটর বাবু কুমার রায়, সহকারী ভ্যালু চেইন ফ্যাসিলিটেটর মোঃ আবু জাহিদ, মোঃ মমিনুর রহমান, মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন, এমআইএস অফিসার মোঃ সাইদুর রহমান প্রমুখদের দক্ষ মনিটরিং এবং সাসের নির্বাহী পরিচালক জনাব শেখ ইমান আলী,সহকারী পরিচালক একেএম গোলাম ফারুকসহ সিনিয়রদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে এ পাইলটিংটি আশার আলো দেখছে। উক্ত প্রকল্পের পরামর্শক হিসাবে কাজ করেন পাইকগাছা উপজেলার দেলুটি গ্রামের দক্ষ কৃষক জনাব সঞ্জয় সরকার। পাইলটিংটি করা হয় সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার খলিষখালী ইউনিয়নের দলুয়া বাজারের পাশের্^ পার কৈখালী গ্রামের বারানগর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মৎস্য উৎপাদনকারী দলের চাষী অপু মন্ডলের মাটির পুকুরে। পুকুরের আয়তন ছিল ৮শতাংশ, এর মধ্যে কালচার পন্ড ৪ শতাংশ ও রিজার্ভ পন্ড ৪ শতাংশ। তালা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জনাব ¯িœগ্ধা খাঁ বাবলী সময়ান্তর এ প্রকল্পে সহযোগিতা ও পরামর্শ প্রদান করেছেন। এ প্রকল্পের মাধ্যমে মৎস্য চাষীদের স্বাবলম্বী করায় জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন কমিটি-২০২২, তালা কর্র্র্তৃক আয়োজিত মূল্যায়ন অনুষ্ঠানে চলতি ২০২২ সালের জাতীয় মৎস্য সপ্তাহে উপজেলার শ্রেষ্ঠ উদ্ভাবনী মৎস্য প্রতিষ্ঠান হিসাবে জনাব, এ্যাডভোকেট মোস্তফা লূৎফুল্লাহ, মাননীয় সংসদ সদস্য, সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া); জনাব ঘোষ সনৎ কুমার, চেয়ারম্যান, উপজেলা পরিষদ, তালা; জনাব প্রশান্ত কুমার বিশ^াস, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও স্থানীয় সিভিল সোসাইটি বে-সরকারী সংস্থা সাস-কে পুরষ্কৃত করেন। এই পর্যন্ত মাটির পুকুরে প্রাপ্ত মোট গলদার পিএল এর সংখ্যা ৫৬,৩২৭টি।