রিয়াদ হোসেন: খুলনার ৫০ শয্য বিশিষ্ট পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই সেবা নিয়ে থাকেন উপজেলার প্রায় ৩ লাখের মতো মানুষ। যাদের মধ্যে স্থানীয় গরীব-অসহায় সাধারণ জনগণের এক মাত্র ভরসা হলো হাসপাতালটি। তবে হাসপাতালটিতে দীর্ঘদিনের চলমান জনবল সংকট, সুপেয় পানির সমস্যা, দালালদের দৌরাত্মের সাথে নতুন করে যুক্ত হয়েছে কতৃপক্ষের কিছু অনিয়ম-দুর্নীতি। প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে সেবা নিতে আসা এসব রোগী এবং তাদের স্বজনরা বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ করেছেন উপজেলা প্রশাসনসহ সরকারের স্থানীয় বিভিন্ন দপ্তরে।
অভিযোগে জানা যায়, চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীদের বহিঃ বিভাগে ডাক্তার দেখানোর জন্য তিন টাকা দিয়ে টিকিট সংগ্রহ করতে হয়। কিন্তু টিকিট সরবারাহের দায়িত্বে থাকা হাসপাতালের অফিস সহায়ক আয়ুব আলী প্রায়ই তিন টাকা নেওয়ায় জায়গায় পাঁচ টাকা নিয়ে থাকেন। অনেক সময় তার বেশিও টাকা নিয়ে টিকিট দিয়ে থাকেন বলেও অভিযোগে উঠে আসে। এছাড়া সে রোগীদের পছন্দমতো বাইরের ডাক্তারের কাছে প্রেরণ করেন বলেও একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) বহিঃ বিভাগে টিকিট প্রতি ৫ টাকা নিতে থাকলে রোগী এবং তাদের লোকজন একযোগে প্রতিবাদ শুরু করলে হাসপাতালের মধ্যে ব্যাপক হৈচৈ পড়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ নানা জায়গায় বেশ সমালোচনা হয়।
এ বিষয়ে সেবা নিতে আসা রাড়ুলী ইউনিয়নের শ্রীকন্ঠপুর গ্রামের মো. সাজ্জাস হোসেন বলেন, ‘আমি ডাক্তার দেখানোর জন্য হাসপাতালে গেলে টিকিট কাটার জন্য আমার কাছ থেকে পাঁচ টাকা নেয়। টিকিটের দাম তিন টাকা হলেও পাঁচ নিচ্ছেন কেন জিঙ্গেস করলে যিনি টিকিট দিচ্ছেন তিনি বলেন পাঁচ টাকা না হলে হবে না’।
হাসপাতালে আসা আরেকজন রোগী ফিরোজ হোসেন বলেন, হাসপাতালে সংকটের শেষ নেই। দালালদের জন্য ভিতরে ঢোকা যায় না। টিকিটের লাইনেও স্বজনপ্রীতি চলে। আর টিকিটের দাম এখন তিন টাকা নেওয়ার কথা থাকলেও পাঁচ টাকা করে নিচ্ছে’।
তবে এ ধরনের অভিযোগের বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নীতিশ চন্দ্র গোলদার। তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। বিষয়টি নিয়ে আমার কাছে অভিযোগ আসলে আমি তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন করবো’।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতাজ বেগম এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হাসপাতালের কাজে বাইরে রয়েছেন। উনি ফিরলে অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে’।
উল্লেখ্য, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নীতিশ চন্দ্র গোলদারের বিরুদ্ধে করোনাকালীন সরকারি ঝুঁকি ভাতার অর্থ আত্মসাতসহ বিভিন্ন অভিযোগ তোলে তার অধীনে কর্মরত স্বাস্থ্য সহকারীরা। এসময় তার বিরুদ্ধে ১৯টি অভিযোগ তদন্ত করতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ ৮ দপ্তরে চিঠি দেয় তারা।