নিজস্ব প্রতিবেদক: কলারোয়া পৌরসভা নির্বাচনের গেজেট প্রকাশ স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোট। সাথে সাথে অনিয়ম সংক্রান্ত রিটকারীদের আবেদন নিষ্পত্তি করার নির্দেশও দিয়েছেন। গত মঙ্গলবার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া এবং বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দিয়েছেন।
আগামী এক মাসের মধ্যে আবেদনকারীর আবেদন নিষ্পত্তির জন্য নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) এই আদেশ দেওয়া হয়েছে। এই একমাসের মধ্যে গেজেট প্রকাশ না করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে ওই আবেদন দ্রুত নিষ্পত্তি না করে ফেলে রাখার নিস্ক্রীয়তাকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না-তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন বিজ্ঞ আদালত। প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ পাঁচজনকে রুলের জবাব দিতেও বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে রিটকারীর আইনজীবী ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম বলেন, নির্বাচনের অনিয়ম তদন্ত করার জন্য আবেদনকারী নির্বাচন কমিশনে আবেদন দিলেও কোন প্রতিকার পাননি। আবেদন করার পরও গেজেট প্রকাশের প্রক্রিয়া শুরু করে ইসি। পরবর্তীতে রিট আবেদনকারী হাইকোর্টে প্রতিকার চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে হাইকোর্ট এই আদেশ দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, স্থানীয় প্রশাসনের উপস্থিতিতে তৃতীয়ধাপে অনিয়ম, সহিংসতা, কেন্দ্র দখল, ব্যালটে সিলমারা ঘটনায় গত ৬ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইলের ভূঁয়াপুর, ঝালকাঠির নলছিটি ও সাতক্ষীরার কলারোয়ার ঘোষিত বেসরকারি ফলাফল স্থগিত করে অনিয়মের তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারদের নির্দেশ দেয় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর মধ্যে কলারোয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং অফিসারের উপর অনাস্থা জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ (সিইসি) অন্যান্যদের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতাকারী ২৫জন প্রার্থী।
ওই আবেদনে তারা উল্লেখ করেন, রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ অন্যান্য মহল অভিনব কায়দায়, গায়ের জোরে কলারোয়ার প্রভাবশালীদের নীল নকশায় এই নির্বাচনটি প্রহসনের নির্বাচনে পরিণত হয়। নির্বাচনের পূর্বে গত ২৮ জানুয়ারি থেকে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও কলারোয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টু গুম হন। এবং আ’লীগের সতন্ত্র বোবাইল ফোনের প্রার্থী আজাদুর রহমান খাঁন চৌধুরীর ভোটের একদিন আগে সকালে প্রত্যাহর করতে বাধ্য করান। এ বিষয় নিয়ে প্রার্থীরা রিটার্নিং অফিসারের কাছে মৌখিক ও লিখিতভাবে অভিযোগ করলেও কোন সহযোগিতা পাননি। তদন্তের দায়িত্ব ঐ বিতর্কিত রিটার্নিং অফিসারে উপর ন্যস্ত করা হয়েছে। তার পরিবর্তে কমিশনের উচ্চপদস্থ ও নিরপেক্ষ কোন দায়িত্বশীল কর্মকর্তার মাধ্যমে সরেজমিনে তদন্তপূর্বক দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি অত্র প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনকে বাতিল করে পুণঃনির্বাচন দাবি জানান আবেদনকারীরা।
এ বিষয়ে এএস এম এনায়েতউল্লাহ খানসহ অন্যান্য প্রার্থীরা নির্বাচন কমিশন থেকে কোন প্রতিকার না পেয়ে উচ্চ আদালতে রিট করেন। পরে হাইকোটের বিচারপতিদ্বয় এ আদেশ দেন।
গত ৩০ জানুয়ারি কলারোয়া পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।