জুলফিকার আলী,কলারোয়া(সাতক্ষীরা)প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার কলারোয়ার মাঠ প্রশাসনে নারী ইউএনও মৌসুমি জেরিন কান্তার স্বগৌরবে তারুণ্যেদীপ্ত হয়ে কাজ করছেন। সব সময় ছুটে চলছেন গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে। “সুশাসনে গড়ি সোনার বাংলা” ছড়িয়ে দিতে অবিরাম গতিতে তার উদ্যম মনোদীপ্ততায় এগিয়ে চলেছেন উপজেলা প্রশাসন কলারোয়া। অনিয়ম দুর্নীতির আধাঁর কেটে আলোর মিছিলে জেগেছে কলারোয়ার সমাজ সভ্যতা। সে আলোয় আজ ঘরে ঘরে পৌঁছে যাচ্ছে সরকারের নানামুখী প্রশাসন সেবা। সাধারণ জনসাধারণের অধিকার প্রতিষ্ঠা প্রত্যাশার প্রশাসনের যাত্রায় তিনি যেন উপজেলার একজন স্বপ্নকন্যা। ব্যক্তিগত জীবনে নবাগত ইউএনও কান্তা দু’টি সন্তানের জননী। তাঁর স্বামী ঢাকার একটি বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত। তার পিতার বাড়ি নড়াইল এবং শ্বশুর বাড়ি ঝিনাইদহের শৈলকুপায়। তিনি ২০২০সালের সোমবার (১৫জুন) সকালে কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসাবে প্রথম অফিস করেন। এখানে যোগদানের পর থেকে তিনি সরকারের সেবাসমূহকে সর্বাত্মক স্বচ্ছতার সাথে সাধারণ জনগণের দোরগোড়ার পৌঁছে দিতে নিরলসভাবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন দমন, বাল্যবিবাহ দমন ও প্রতিরোধ, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের রাস্তা সংষ্কার, মসজিদ, মন্দির, শ্মশাণ সংষ্কার ও নির্মাণসহ পারিবারিক ও সামাজিক দ্বন্দ্ব নিরসনে দায়িত্বের সাথে ভূমিকা রেখে যাচ্ছেন। তিনি কলারোয়া উপজেলা ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরীণ চুরি বন্ধে মসজিদ চত্বরসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে সিসি ক্যামেরা স্থাপন, প্যানেলসহ সোলার লাইট স্থাপন করেছেন। মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে উপজেলা পরিষদ চত্বরে মুজিব ভাস্কর্য স্থাপন করেছেন। তিনি কলারোয়ায় এত অল্প দিনের মধ্যে একজন শিক্ষাবান্ধব ব্যক্তিত্ব হিসেবে উপজেলার প্রাথমিক, মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে বিভিন্ন সময়ে পদার্পন করেন। কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীর গুণগত এবং লেখা পড়াার জন্য মানসম্মত বিদ্যাপীঠ গড়ে তোলার নানা কার্যক্রম শুরু করেছেন ইতোমধ্যে। বিদ্যালয়ে ইউএনও’র ঝটিকা অভিযানের ফলে নিয়ম মাফিক চলছে বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম। ক্লাশের পড়া ক্লাশে নিশ্চিত করার ফলে প্রাইভেট নামের কোচিং বাণিজ্য বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। উপজেলায় নারী জাতিকে শিক্ষিত করে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার সিঁড়ি হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি অবিরত। এক প্রশ্নের জবাবে মৌসুমি জেরিন কান্তা এ প্রতিবেদককে বলেন, প্রশাসন ক্যাডার নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই উন্মুক্ত। তবে এখানে একজন পুরুষ কর্মকর্তা যেভাবে অনায়াসে খ্যাতি বা সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেন, একজন নারী কর্মকর্তাকে তার দক্ষতা ও যোগ্যতা প্রমাণ করে গ্রহণযোগ্যতার সে পর্যায়ে আসতে প্রচুর কষ্ট করতে হয়। কারণ, একজন পুরুষ কর্মকর্তাকে সবাই যেভাবে গ্রহণ করে, একজন নারী কর্মকর্তাকে সেভাবে গ্রহণ করতে চায় না, যা মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। তাছাড়া নারী কর্মকর্তা হিসেবে প্রশাসনিক কাজে বিভিন্ন সময়ে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে বাধার সম্মুখিন হতে হয়েছে এবং সে বাধা দক্ষতার সাথে অতিক্রম করার চেষ্টা করেছি। কারণ, একজন নারী কর্মকর্তার কাছে পুরুষের পাশাপাশি নারীরা নির্বিঘ্নে তাদের সমস্যাগুলো প্রকাশ করতে পারে, যা জনগণের অধিকার নিশ্চিতকরণসহ নারীর ক্ষমতায়নে সহায়ক। তিনি আরো বলেন-এই উপজেলায় যোগদানের পরে উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়েছে উপজেলা প্রশাসন। সরকারের দেয়া বাড়ী-ঘর সুষ্ঠু ভাবে অসহায় মানুষের মাঝে প্রদান করেছি আর এখনও কিছু ঘরের কাজ চলছে অতি শিগ্রহী তাদের মাঝে ঘর তুলে দেয়া হবে। উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানগণ বলেন, বর্তমান উপজেলা প্রশাসনের দায়িতেরত্ব ইউএনও মহোদয় খুবই দায়িত্বশীল এবং কর্মঠ। সরকারের রুটিন কাজকর্ম থেকে উন্নয়ন সবই সে নিপুণ হাতে দক্ষতার সঙ্গে পালন করে যাচ্ছেন। মাদক, বাল্যবিবাহ, দুনীর্তিসহ বিভিন্ন বিষয়ে তিনি নিষ্ঠার সাথে কাজ করছেন। তিনি জনগণের অধিকার রক্ষা ও প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সরকারি সেবা প্রাপ্তিতে নারী-পুরুষ, ধনী-দরিদ্র, প্রভাবশালী-দুর্বল সবার সমান অধিকার নিশ্চিত করেছেন। এক্ষেত্রে তিনি সরকারের সেবা প্রকৃত ব্যক্তির প্রাপ্তির বিষয়কে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। তালা-কলারোয়ার সংসদ সদস্য এড.মুস্তফা লুৎফুল্লাহ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমি জেরিন কান্তার প্রসঙ্গে বলেন, আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি আমার কলারোয়া উপজেলায় ইউএনও হিসেবে তিনি সেরা। আমার কিছু পরামর্শে শ্রদ্ধশীল হয়ে প্রতিটি কাজ তিনি দক্ষহাতে পরিচালনা করেন। তাঁর কাজ দেখে আমি খুবই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। প্রশাসনে রাজনীতি নয়, উন্নয়নের জন্য প্রশাসন। একজন নারী কর্মকর্তা যোগদান করায় অনেকে বিরূপ মন্তব্য করেছিল কিন্তু তিনি যোগ্যতা দিয়ে প্রমাণ করেছেন তিনি একজন দক্ষ অফিসার। রাষ্ট্রে নারীর ক্ষমতায়ন ও অগ্রাধিকার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সরকারের নীতি বাস্তবায়নে প্রশাসনে দৃঢ়তার সঙ্গে কাজ করছেন। যে কারণে আজ তিনি হয়ে ওঠেছেন অভিন্ন। সম্পূর্ণ প্রচার বিমুখ, উদর ও সাদা মনের মানুষের মর্যাদা তথা মানুষের উন্নয়নের অদম্য অগ্রযাত্রায় তিনি আজ একজন আলোর মুখচ্ছবি
পূর্ববর্তী পোস্ট