জুলফিকার আলী,কলারোয়া(সাতক্ষীরা)প্রতিনিধিঃ অদম্য ইচ্ছাশক্তির কাছে
অসম্ভব বলে কিছু নেই। সেটি আরও একবার প্রমাণ করলেন সাতক্ষীরার কলারোয়ার
আধ্যাত্মিক বাউল শিল্পী কন্যা আসমা আক্তার মিতা। বাবা বউল সুর সাধক।
বাদ্য, বাজনা, সুর-লহরীর তানে কাটে তাঁর এক একটি দিন। দারিদ্রভরা সংসার।
ছিলো লেখাপড়া চালিয়ে যাবার ক্ষেত্রে নানা প্রতিকূলতা। কিন্তু তাতে দমে
যাননি অদম্য আসমা আক্তার মিতা। টিউশনের টাকায় বই কিনে দিনে পড়ালেখা
করেছেন ১৬ ঘণ্টা পর্যন্ত। দুর্দান্ত ইচ্ছাশক্তির জোরেই বাউল সুর সাধকের
মেয়ে আসমা আক্তার মিতা হয়েছেন বিসিএস ক্যাডার। জানা গেছে, কলারোয়া
উপজেলার কেরালকাতা ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রাম কিসমত ইলিশপুরের বাসিন্দা
আসমা আক্তার মিতা। আসমার বাবা মোতাহার হোসেন মন্ডল ফকিরী মতের একজন
আধ্যাত্মিক বাউল সুর সাধক। তিনি বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠিত ফকিরী মেলায় গান
করে থাকেন। সুর সাধনার এই সাধকেরা অর্থিকভাবে দৈন্যভরা জীবন যাপন করেন,
তা সবারই জানা। অভাবের সংসারের মাঝেও নিজেকে আলোকিত করেছেন আসমা আক্তার
মিতা। শুধু তাই নয়, ছোট্ট কিসমত ইলিশপুর গ্রামকে আলোকিত করেছেন তিনি। গত
৩০ মার্চ ৪০তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম
কমিশন । তাতে মিতা ম্যাজিাস্ট্রট হিসেবে প্রশাসন ক্যাডার থেকে
সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। আসমা আক্তার মিতা জানান, তিন ভাই-বোনের মধ্যে
তিনি সবার ছোট। একমাত্র ভাই ফয়সাল হোসেন রিকো দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা
করলেও এসএসসি পরীক্ষা দেননি। সে সবার বড়। বড় বোন রেশমা আক্তার লতা ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে ২০১৫ সালে মাস্টার্স শেষ করেন। জানা
যায়, আসমা আক্তার মিতা কলারোয়ার কেকেইপি সম্মিলিত মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে
২০১০ সালে এসএসসি পরীক্ষা দেন। এরপর কাজিরহাট ডিগ্রী কলেজ থেকে ২০১২সালে
এইচএসসিতে কৃতিত্বেও সাথে পাস করে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তারপর
আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁর। আসমার গর্বিত বাবা মোতাহার হোসেন তার
কন্যার জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।
পূর্ববর্তী পোস্ট