আক্তারুল ইসলাম সাতক্ষীরা:
সাতক্ষীরার তালার কলাগাছিতে খাল খননে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদার উত্তম সেন(বাবুলাল)এর বিরুদ্ধে। প্রকল্পে নতুন আবাদের খাল থাকলেও বয়ারটানা খাল খনন করেছেন তিনি। যেনতেন ভাবে খনন করে গোপনে পানি উঠিয়ে দিয়ে কাজ শেষ করার অভিযোগও তার বিরুদ্ধে।সরেজমিন পরিদর্শন ও এলাকাবাসির সাথে কথা বলে জানা যায়, তালার খেশরা ইউনিয়নের কলাগাছি গ্রামে তালা মৎস্য অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে নতুন আবাদের খাল ১৬.১১০ ঘনমিটার পূনঃ খনন প্রকল্পে ২০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয় মৎস্য অধিদপ্তর। প্রকল্পটি ১৫ ফেব্রুয়ারী-’২১ তারিখে শুরু হয়ে ৩১ মার্চ -’২১ তারিখে শেষ করার নির্দেশনা থাকলেও অসৎ উদ্দেশ্যে তাল বাহানা করে কাজ শুরু করা হয়নি। যেনতেন ভাবে কাজ করার উদ্দ্যেশ্যে বর্ষা মৌশুমে কাজ শুরু করা হয়েছে। এজন্য মন্ত্রনালয় থেকে সময়ও বাড়িয়ে নিয়েছেন ঠিকাদার উত্তম সেন(বাবুলাল)।শালিখা নদীর সাথে যুক্ত হয়ে কলাগাছী গ্রামের মধ্যদিয়ে দক্ষিন দিকে প্রবাহিত বয়ারটানা খাল। কলাগাছি গ্রামের শেষ প্রান্ত থেকে নতুন আবাদের খাল শুরু। প্রকল্পে নতুন আবাদের খাল থাকলেও অপেক্ষা কৃত গভীর ও প্রসস্থ বয়ারটানা খাল খনন করা হয়েছে।এসিএস কমিটির তত্বাবধানে খালটি খননের কথা থাকলেও এক্ষেত্রে তার ব্যাত্যয় ঘটেছে। তালার মুড়াগাছা গ্রামের অশোক অধিকারীর ছেলে সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুমন অধিকারী এই খালটি খননের জন্য অনুমোদন করিয়ে দেয়ার কারণে তার কর্তৃত্বও এখানে প্রতিয়মান। তারই নির্দেশনায় ধর্ম বোন জামাই কলাগাছি গ্রমের মৃত পরিমল সরকারের ছেলে সুরজ্ঞন সরকার কে সভাপতি ও নিশিকান্ত সরকারের ছেলে কৃষ্ণপদ সরকারকে সম্পাদক করে এবং তার নিকট আতœীয়দের সমন্বয়ে ১৭ সদস্য বিশিষ্ট এসিএস কমিটি গঠন করে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে।খাল তীরবর্তী বসবাসকারী একাধিক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নতুন আবাদের খাল খনন করার জন্য বরাদ্দ আসলেও সেটা না করে বয়ারটানা খাল খনন করা হয়েছে। বয়ারটানা খাল বড় এবং কম কাঁটা লাগবে বলে এই খালটি কাঁটা হয়েছে। শুষ্ক মৌশুমে খাল কাঁটার কথা থাকলেও বর্ষার সময় এসে কাজ শুরু করেছে। যাতে অল্প কেঁটে পানি ভরে দিয়ে টাকা আতœসাৎ করা যায়। এই প্রকল্পের সাতে মুড়াগাছা গ্রামের এসিল্যা- সুমন অধিকারীও জড়িত বলে আমরা শুনেছি।এবিষয়ে জানতে চাইলে সুরজ্ঞন সরকার বলেন, আমাকে সভাপতি করা হলেও প্রকল্প বিষয়ে আমি কিছু জানিনে। টাকা উঠানোর সময় উত্তম ডাকলে আমি সহি করে দিয়ে আসি। এ পর্যন্ত ২ বারে ৯ লক্ষ টাকা উঠানো হয়েছে।সভাপতি হিসেবে আপনার কি কাজ জানতে চাইলে তিনি বলেন, দাদা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুমন অধিকারী আমাকে বেশী খোঁজ খবর নিতে নিষেধ করছেন। সে জন্য উত্তম যা বলে আমি তাই করি।প্রকল্পের ঠিকাদার উত্তম সেন বলেন, প্রকল্প অনুযায়ী কাজ শেষ করেছি। কোনো অনিয়ম করা হয়নি। যেনতেন কাজ করে গোপনে পানি উঠিয়ে দেয়ার বিষটিও ঠিক না। শুষ্ক মৌশুমে কাঁটার কথা থাকলেও বর্ষা কালে কেন শুরু করলেন এমন প্রশ্নের কোনো সন্তোষ জনক জবাব তিনি দিতে পারেননি।এর আগে উত্তম সেন বলেছিলেন, কাজ এখনো শেষ হয়নি। এলাকার লোকাজন ঘেরে পানি উঠানোর জন্য রাতে বাঁধ কেঁটে দিয়েছে। প্রয়োজনে আবারও বাঁধ দিয়ে পানি কমিয়ে খাল খনন করা হবে।প্রকল্প পরিদর্শক তালা মৎস্য কর্মকর্তা ¯িœগ্ধ্যা খাঁ বাবলি বলেন, প্রকল্প অনুযায়ী কাজ শেষ করা হয়েছে। শুধু মাত্র ড্রেসিং বাকি আছে। এখানে কোনো অনিয়ম হয়নি। রাতের আঁধারে পানি উঠিয়ে দেয়া হয়েছে কি ভাবে কাজ করবেন জানতে চাইলে প্রশ্ন এড়িয়ে তিনি বলেন, আমি শুধু পরিদর্শক, মূল দায়িত্ব জেলা মৎস্য অধিদপ্তরের।এই প্রকল্পের সাথে এসিল্যা- সুমন আধিকারীর সম্পর্ক কি জানতে চাইলে মৎস্য কর্মকর্তা বাবলি বলেন, সুমন আমার বন্ধু।সে এই এলাকার উন্নয়নের জন্য এই বরাদ্দ গুলো অনুমোদনের জন্য সহযোগীতা করছে। এর বাইরে কিছুই নয়। কমিটিতে এসিল্যা-ের আতœীয়রা জড়িত থাকার বিষয়ে বাবলী বলেন, এটা আমার জানা নাই।
পূর্ববর্তী পোস্ট