নিজস্ব প্রতিনিধি: দীর্ঘদিন ধরে ভূমিহীনদের রক্ত চুষে খাওয়া ভূমিদস্যুদের উৎখাতের মধ্য দিয়ে প্রায় একযুগ পর পুনরায় খেলার মাঠ ফিরে পেয়েছেন দেবহাটার ভূমিহীন অধ্যুসিত জনপদ নোড়ারচক-চারকুনিতে বসবাসরত ভূমিহীনরা। এতে করে আবারো নতুন করে স্বস্তি ফিরেছে ভূমিহীন জনপদের বাসিন্দাদের মনে। মঙ্গলবার সকালে ভূমিহীন জনপদের শত শত বাসিন্দারা ঐক্যবদ্ধভাবে নোড়ারচক-চারকুনিতে অবস্থিত প্রায় ১৩ বিঘা জমির বিস্তৃত ওই খেলার মাঠটি দখলে নেয়ার মধ্য দিয়ে ভূমিদস্যুদের সেখান থেকে উৎখাত করেন। নোড়ারচক-চারকুনি ভূমিহীন জনপদের সভাপতি আব্দুল গফফার ও সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বলেন, ভূমিহীন জনপদে বসবাসরত হাজার হাজার ভূমিহীনদের সভা সমাবেশ ও তাদের শিশু, কিশোর ও যুবকদের খেলাধুলার জন্য সেখানে প্রায় ১৩ বিঘা জমিতে বিস্তৃত একটি খেলার মাঠ রয়েছে। বিগত প্রায় একযুগ ধরে ওই খেলার মাঠটি ভূমিদস্যু মৃত মোহর আলীর ছেলে ইয়াদ আলী, ময়নুদ্দীন সানার ছেলে আমজাদ সানা, ইয়াদ আলী মোড়লের দুই ছেলে সাইফুল ইসলাম ও শরিফুল ইসলাম এবং মৃত তালেব মোড়লের ছেলে আরেক ইয়াদ আলী নিজেদের ইচ্ছেমত বিভিন্ন মানুষের কাছে ইজারা দিয়ে বিনা হিসাবে সমস্ত টাকা তছরুপ করে আসছিল। শুধু তাই নয়, ভূমিহীন জনপদের সরকারি খাস জমি বন্দোবস্ত করিয়ে দেয়ার নাম করেও এসব ভূমিদস্যুরা বিগত কয়েক বছরে লক্ষ লক্ষ টাকা চাঁদা তুলে আত্মসাত করে। ভূমিহীন সংগঠনের পক্ষ থেকে এসব ভূমিদস্যুদের বার বার সতর্ক করা স্বত্ত্বেও তারা আত্মসাতকৃত টাকার হিসাব না দিয়ে বরং খেলার মাঠটি আবারো স্থানীয় জালাল গাজী নামের এক ব্যাক্তির কাছে চার লক্ষাধিক টাকায় মৌখিক ইজারা দিয়ে সমুদয় টাকা আত্মসাত করে। অন্যদিকে খেলার মাঠটি ভূমিহীন সংগঠনের সভা সমাবেশ এবং ওই জনপদের আগামী প্রজন্মের শারিরীক-মানসিক বিকাশ ও খেলাধুলার জন্য প্রয়োজনীয় হওয়ায় মঙ্গলবার ভূমিহীনরা ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠটি পুনরায় তাদের দখলে নিয়ে নেয়। এদিকে খেলার মাঠটি প্রকৃত ভূমিহীনরা তাদের দখলে নেয়ার পর সেখান থেকে উৎখাত হওয়া ভূমিদস্যুরা আবারো ভূমিহীন জনপদকে অস্থিতিশীল করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এমনকি ভূমিদস্যুরা অবৈধ সুবিধা পেতে স্থানীয় থানা পুলিশ সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক মহলে দৌড়ঝাপ শুরু করেছে বলেও অভিযোগ করেন ভূমিহীন সংগঠনের সভাপতি আব্দুল গফফার ও সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম। তারা ভূমিহীন জনপদের সাধারণ মানুষের স্বার্থরক্ষায় খেলার মাঠটি পূর্বের ন্যায় উন্মুক্তভাবে সর্বসাধারণের ব্যবহার এবং ষড়যন্ত্রকারী ওইসব ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
পূর্ববর্তী পোস্ট