স্টাফ রিপোর্টার: দিন-দুপুরে লাবসার দরগাহপাড়ায় অস্ত্রধারী চিহ্নিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে জমি জবর দখলের অভিযোগ উঠেছে। বুধবার সকাল আনু: ১০ টার দিকে ক্রয়সূত্রে প্রাপ্ত কামালনগর গ্রামের মৃত. শাফাওয়াত করিমের ছেলে আফজালুল করিম বিপুর ৩০ শতক জমি জোরপূর্বক লাবসার দরগাহপাড়া গ্রামের মৃত. রহমান সানার ছেলে মো: আব্দুস সবুর, মায়া, জিকো, যতীসহ অজ্ঞাত ১০/১২ জন ব্যক্তি দখলে নেওয়ার চেষ্টা করেন।
তথ্যনুসন্ধানে জানা যায়, পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত সাতক্ষীরা সদর উপজেলার অন্তরগত লাবসা মৌজার ৮৪১ খতিয়ানের ৬৯৪ দাগে ১.০২ একর জমির মালিক লাবসা দরগাহপাড়া গ্রামের মৃত. গোলাম মোস্তফার ছেলে শেখ নজরুল ইসলাম (সাধন)। যার ডিপি-৪৬০/৯৬৫। ওই জমির মধ্যে ৩০ শতক জমি শহরের কামালনগর গ্রামের মৃত. শাফাওয়াত করিমের ছেলে আফজাজুল করিম কাছে বিক্রয় করেন তিনি। ঐ জমি সাতক্ষীরা সদর সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে ২০২১ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি রেজিষ্ট্রি হয়। যার দলিল নং-১৭১২। ওই ৩০ শতক জমি সদর সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে রেজিষ্ট্রির পূর্বে মাপ জরিপ করিয়া আফজালুল করিমকে বুঝিয়ে দিয়েছিল সাধন।
জানা যায়, রেজিষ্ট্রির পরে ওই জমিতে আফজালুলের লোকেরা ঘেরাও দিয়েছিলেন। সেই সময়ে ঐ অস্ত্রধারী চিহ্নিত ব্যক্তিরা লিবারদের বাঁধা দিলে লোকেমুখে জানতে পেরে ঘটনাস্থল যেয়ে তাদের বিপু বাঁধা দিলে তারা (অস্ত্রধারী চিহ্নিত ব্যক্তিরা) রাস্তায় দাঁড়িয়ে অকথ্যভাষায় গালিগালাজ করিত মারধর করিতে তাকে (বিপু) উদ্যত হয়। এছাড়াও রাস্তাঘাটে আমাকে ফাঁকা পাইলে গুলি করে খুন করিবে, শান্তিতে থাকিতে দিবে না, ওই ক্রয়কৃত জায়গা জোরপূর্বক দখল করিবে বলে হুমকি দেয় তারা। ওই ঘটনায় নিজের ও পরিবারের সদস্যদের জান ও মালের নিরাপত্তার কথা ভেবে সাতক্ষীরা থানায় হাজির হয়ে ২২ ফেব্রুয়ারি একটি সাধারণ ডায়েরী করেন আফজালুল করিম (বিপু)। যার নং-১২০৮, তাং-২২/০২/২০২১। কিন্তু জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে বিপুর ক্রয়কৃত জমিতে কাজ করলে আবারও সবুরের লোকজন বাঁধা দেয়। একপর্যায়ে বুধবার সকালে বিপুকে হত্যার উদ্দেশ্যে নিজের বাড়িতে থাকা শটগান বের করে সবুর গুলি করতে উদ্যত হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, লাবসা মৌজার ৮৪১ খতিয়ানের ৬৯৪ দাগে ১.০২ একর জমির মালিক লাবসা দরগাহপাড়া গ্রামের মৃত. গোলাম মোস্তফার ছেলে শেখ নজরুল ইসলাম (সাধন)। ওই জমির মধ্যে একই গ্রামের মৃত. রহমান সানার ছেলে মো: আব্দুস সবুর ৪৭ শতক জমি বিক্রয় করেন। তবে জোরপূর্বক আরও ৩০ শতক জমি দখলে নেওয়ার জন্য বার বার চেষ্টা করতে থাকে সবুর। সেই ধারাবাহিকতায় ভাড়াটিয়া লোক এনে আজও ঐ জমি দখলে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ক্রয়সূত্রে ওই ৩০ শতক জমির মালিক আফজালুল করিম বিপু প্রতিহত করার চেষ্টা করলে ঐ অস্ত্রধারী চিহ্নিত ব্যক্তি (সবুর) তাকে হত্যার চেষ্টা করতে উদ্যত হয়। প্রকৃতপক্ষে ওই ৩০ শতক জমি সবুর পাবে না। অথচ ওই জমি কেন বারবার দখল করার চেষ্টা করছেন তা আমাদের বোধ গম্য নহে। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানানোর পাশাপাশি দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেওয়ার জোর দাবি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে করেন তারা।
ঘটনাটি সম্পর্কে ওই জমির মূল মালিক শেখ নজরুল ইসলাম (সাধন) জানান, পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত হয়ে আমি ওই জমির মালিক। ওই ৩০ শতক জমি আমার দখলে থাকাবস্থায় কামালনগর গ্রামের মৃত. শাফাওয়াত করিমের ছেলে আফজাজুল করিমের কাছে বিক্রয় করেছি। সেই জমি বিপু দখলে গেলে সবুর বেপরোয়া হয়ে উঠে। ওই সবুর একজন অস্ত্রধারী চিহ্নিত ব্যক্তি ও তার ছেলে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মামুন হত্যা মামলার আসামী। আবারও ক্রয়সূত্রে প্রাপ্ত বিপুর জমি সুবরেরা দখল করতে গেলে বা গোলোযোগ সৃষ্টি করলে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের প্রতিহত করা উচিত।
বিষয়টি সম্পর্কে ভুক্তভোগী আফজালুল করিম বিপু জানান, লাবসা মৌজার ৮৪১ খতিয়ানের ৬৯৪ দাগে ১.০২ একর জমির মধ্যে ক্রয়সূত্রে প্রাপ্ত ৩০ শতক জমির মালিক। ওই জমি লাবসার দরগাহপাড়া গ্রামের মৃত. গোলাম মোস্তফার ছেলে শেখ নজরুল ইসলাম (সাধন) এর কাছ থেকে ক্রয় করেছি। এরপরে জমিতে গেলে সবুরসহ ১০/১২ জন অজ্ঞাত ব্যক্তি বাঁধা প্রদান করার চেষ্টা করেন। তাদের আমি প্রতিহত করতে গেলে বারবার আমাকে তারা হত্যার চেষ্টা করতে উদ্যত হয়। এই ঘটনায় নিজের নিরাপত্তার কথা ভেবে সাতক্ষীরা থানায় হাজির হয়ে ২২ ফেব্রুয়ারি একটি সাধারণ ডায়েরীও করেছিলাম। কিন্তু অদ্যাবধি ওই সবুরগণরা জমিটি জোরপূর্বখ দখলে নিতে চেষ্টা করছেন। তাদের হাত থেকে রক্ষা পেতে জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার সহ সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান জানান, ওই ঘটনায় কয়েকদিন পূর্বে একটি ডায়েরী করেছিল। তদন্ত কর্মকর্তা বিষয়টি তদন্ত করছে। তদন্ত রিপোর্ট পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।