সাতক্ষীরা প্রতিনিধি ঃ সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটার বড় কাশিপুর গ্রামের চাঞ্চল্যকর গৃহবধূ তামান্না হত্যার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় চার আসামীর জামিন আবেদন না’মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সাতক্ষীরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জি আযম বৃহষ্পতিবার জামিন আবেদন শুনানী শেষে এ আদেশ দেন।
জামিন না’মঞ্জুর হওয়া আসামীরা হলেন, বড় কাশীপুর গ্রামের আব্দুর রউফের ছেলে ফিরোজ হোসেন, একই গ্রামের রফর আলীর ছেলে শেখ আব্দুল হামিদ, সোহরাব হোসেনের ছেলে নাজমুল হোসেন ও নজরুল ইসলামের ছেলে সালাহউদ্দিন।
মামলার বিবরনে জানা যায়, মালয়েশিয়া প্রবাসী কলারোয়ার তুলসীডাঙার সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে পাটকলেঘাটার বড় কাশীপুর গ্রামের আব্দুল হকের মেয়ে তামান্নার মোবাইল ফোনে বিয়ে হয় ২০০০ সালে। এরপর তামান্না তাকে তালাক দিয়ে পুরাতন সাতক্ষীরার আবুল হোসেন সরদারের ছেলে ফরহাদ হোসেনকে চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল বিয়ে করে। গত ৫ মে সন্ধ্যায় তাদের বাড়ির পাশে কপোতাক্ষ নদের ধারে স্বামী ফরহাদের সঙ্গে বেড়াতে যায়। রাত সাড়ে ৮টার দিকে পূর্বের স্বামী সাদ্দাম ও বড় কাশীপুর গ্রামের আব্দুল আলালের ছেলে শেখ তুহীন হোসেনসহ জামিন না’মঞ্জুর হওয়া উক্ত আসামীরা তামান্নাকে লক্ষ্য করে দাহ্য পদার্থ ছুঁড়ে মারে। এতে তামান্নার পিঠ, মুখ ও বুকসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ ঝলসে যায়। স্ত্রীকে বাঁচাতে যেয়ে দগ্ধ হয় স্বামী ফরহাদ। একপর্যায়ে তামান্না ও ফরহাদকে ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ণ ইউনিটে ভর্তি করা হয়। এরপর ৬ মে তামান্নার বাবা আব্দুল হক বাদি হয়ে সদ্দাম হোসেন, তুহীন শেখ, ফিরোজ, নাজমুল, আব্দুল হামিদ ও সোহারাব হোসেনের নাম উল্লেখ করে পাটকেলঘাটা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন। ওই দিনই পুলিশ সাদ্দাম ও তুহিনকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠায়। এরপর ১০ মে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তামান্না মারা যায়।
সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি অ্যাড. জহুরুল হায়দার বাবু জানান, গত ২৮ জুন ফিরোজ হোসেন, শেখ আব্দুল হামিদ, নাজমুল হোসেন ও সালাহউদ্দিন মহামান্য হাইকোর্টে অগ্রিম জামিন আবেদন করেন। আদালত তাদেরকে চার সপ্তাহের মধ্যে সাতক্ষীরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করতে বলে। সে অনুযায়ি ওই চার আসামী বৃহষ্পতিবার সংশ্লিষ্ট আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে বিচারক এমজি আযম আবেদন শুনানী শেষে জামিন না’মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
জামিন না’মঞ্জুর হওয়া ফিরোজ হোসেন বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে তাদের চারজনের কোন সম্পর্ক নেই। জমি নিয়ে মামলার কারণে পরিকল্পিতভাবে তাদেরকে আসামী করা হয়েছে।