আবু সাঈদ সাতক্ষীরা : অনাবৃষ্টি, প্রচন্ড গরম ও দাবদাহে বিপর্যস্ত জনজীবন। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলছে সূর্যের তীব্র দাবদাহ। মাঠে পানি না থাকায় আমন মৌসুমের চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে। এদিকে ভ্যাপসা গরমে জ্বর, ঠান্ডা, ডায়রিয়াসহ গরমজনিত নানা রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। সূয্যের প্রচন্ড উত্তাপে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। রোদের তেজে ঘর থেকে বের হচ্ছে না অনেকেই। সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে লোডশেডিং। বৃষ্টিহীন কাট ফাটা রোদ আর গরমের দাপটে জনজীবনে যখন বিভ্রান্তি অবস্থা তখন মিলছে না বিদ্যুৎ। লোডশেডিংয়ের শিডিউল প্রায় সর্বত্রই অকার্যকর হয়ে পড়েছে। সাতক্ষীরায় কোথাও কোথাও ৭/৮ ঘণ্টাই বিদ্যুৎ থাকছে না। কোথাও দুই ঘণ্টা পরপর বিদুৎ আসছে, তাও আবার স্থায়ী হচ্ছে এক ঘণ্টা। এক দিকে সব ধরনের জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিতে পণ্যের দাম বেড়ে গেছে, সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে লোডশেডিংয়ের মাত্রা। অস্বাভাবিক ও অসহনীয় লোডশেডিংয়ে নাগরিক জীবন প্রায় অচল হয়ে পড়ার উপক্রম হয়েছে। সবার মুখে একই কথা-এমন বিদ্যুৎ সংকট এর আগে কখনও দেখেননি কেউ। যতই দিন যাচ্ছে বিদ্যুৎ সংকট ততই যেন বাড়ছে। সাতক্ষীরার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে প্রশান্তির আশায় মানুষকে গাছের ছায়ায় কিংবা শীতল কোনো স্থানে বসে বা শুয়ে থাকতে দেখা গেছে। ফ্যানের বাতাস যেনো লু-হাওয়া। স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারছেন না পণ্য ডেলিভারি ম্যান, রিকশা-ভ্যানচালক থেকে শুরু করে দিনমজুররা। এদিকে গরমে বেড়েছে হাতপাখা বিক্রি। পারভীন নামের এই ব্যাক্তি বলেন, ‘কিছুদিন আগেও এই অবস্থা ছিল না। এখন তো বাচ্চাদের নিয়ে চরম কষ্টে আছি। ওরা ঠিকভাবে না ঘুমাতে পারছে, না পারছে লেখাপড়া করতে। রাত নেই দিন নেই বিদ্যুতের যাওয়া আসা লেগেই আছে। সাতক্ষীরার মথুরাপুর এলাকার কামাল উদ্দিন বলেন, ‘কারেন্টের কথা আর বলবেন না ভাই। সারা দিন-রাতে তিন চার ঘণ্টাও ঘুমাতে পারছি না। বিদ্যুতের যাওয়া আসা লেগেই আছে। না পারছি ঘুমাতে, না পারছি বসতে। মাঝরাতে যখন বিদ্যু চলে যায়, তখন কী যে কষ্ট হয় তা বোঝাতে পারবো না।’ এবিষয়ে কথা হয় সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাঃ মীর মাহফুজ আলম এর সাথে প্রয়োজনের ব্যাতিরেকে ঘরের বাইরে না যাওয়া, জনসচেতনতা বৃদ্ধিসহ প্রচন্ড গরমে তরল খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। এছাড়াও গরমে রোগবালাই থেকে বাঁচতে রাস্তার পাশে খোলা খাবার এবং অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি খাওয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।
পূর্ববর্তী পোস্ট