নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কাশেমপুর মালিপাড়া এলাকায় বসত ঘরের ভিতর থেকে সালাউদ্দীন আহমেদ নামে এক কিশোরের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার (১০ এপ্রিল) দুপুরে ঘরের ভিতর সালাউদ্দীনের গলাকাটা অবস্থায় দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে সালাউদ্দীনের মরদেহ উদ্ধার করেছে। পুলিশ এসময় হত্যায় ব্যবহৃত একটি ছুরি উদ্ধার করে। স্থানীয়দের ধারণা সিটি কলেজ মোড় এলাকায় গড়ে উঠা কিশোর গ্যাংয়ের মাদক বিকিকিনি সংক্রান্ত অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে প্রাণ দিতে হয়েছে কিশোর সালাউদ্দীনকে।
নিহতের পিতা বাবু সরদার জানান, বাড়িতে কেউ না থাকার সুবাদে গতকাল রাতে সালাউদ্দীন ও তার বন্ধু রসুলপুরের সাগর হোসেন একই কক্ষে ছিল। আজ দুপুরের দিকে সাগরের বাবা সহিদুল ইসলাম তাকে সালাউদ্দীনকে খোঁজ নিতে বলেন। তিনি তখন বাড়িতে যেয়ে তার ছেলের মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেন।
সালাউদ্দীনকে রাতে সাগর হোসেনই ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে, এমন অভিযোগ করে তার বিচার দাবী করে নিহতের বোন রীতামনি বলেন, সব সময় একসাথে ঘুরত সাগর ও সালাউদ্দীন। গতকাল রাতে তারা দু’জন একই কক্ষে ছিলো। প্রতিবেশি অনেকেই তা দেখেছে। দুপুরে পুলিশ যখন তার ভাই সালাউদ্দীনের মরদেহ উদ্ধার করে,তখন বাইরে থেকে তালা মারা ছিল। সুতরাং এই খুন সাগরই করেছে।
তবে এলাকার অনেকেই নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, সাগর ও সালাউদ্দীন মাদক চোরাচালান ও সেবনের সাথে জড়িত। তাদের নেতৃত্বে এলাকায় একটা কিশোর গ্যাং গড়ে উঠেছে। যারা বিভিন্ন সময় অপরাধমুলক কর্মকান্ড করে বেড়ায়। এছাড়া সালাউদ্দীনের বাবা বাবু সরদারও চিহিৃত একজন মাদক ব্যবসায়ী। মাদক চোরাচালানের ভাগ-বাটোয়ারা সংক্রান্ত বিরোধে এমন হত্যাকান্ড ঘটতে পারে বলে ধারণা এলাকাবাসির।
সাতক্ষীরা সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ বুরহানউদ্দিন জানান, সাগর ও সালাউদ্দিন মাদকাসক্ত। মাদক নিয়ে ভাগাভাগিকে কেন্দ্র করে সাগর তার বন্ধু সালাউদ্দিনকে গলা কেটে হত্যা করতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় রসুলপুরের রফিকুল ইসলাম নামের একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। সাগরকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
সাতক্ষীরা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শামসুল হক শামস্ ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ নিহত সালাউদ্দীনের মরদেহ উদ্ধার করেছে। তাকে গলা কাটা অবস্থায় পাওয়া গেছে। পুলিশ হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত একটি ছুরি উদ্ধার করেছে। কে বা কারা হত্যাকান্ডে জড়িত এবং কী কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে তা খুজে বের করতে পুলিশ ইতোমধ্যে মাঠে নেমেছে। তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে। হত্যাকারীকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে। নিহতের মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
সিটি কলেজ এলাকায় কিশোর গ্যাং গড়ে উঠার বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, ওই এলাকায় একটি কিশোর গ্যাং গড়ে উঠেছে বলে শোনা যাচ্ছে। সালাউদ্দীন হত্যাকান্ডে বিষয়টি সামনে এসেছে। বিষয়টি পুলিশের মাথায় রয়েছে।