ফিরোজ হোসেন, সাতক্ষীরা
গোলমেশিন খ্যাত জাতীয় নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুনকে সাতক্ষীরায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার বেলা ১১ টায় সাতক্ষীরা সার্কিট হাউজ মোড়ে তাকে ওরিয়ন স্পোর্টস একাডেমিসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। পরে সাতক্ষীরা ক্রীড়া সংস্থার একটি পিকআপে চড়ে গোল্ডেন বুট ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়ের ট্রপি হাতে উচিয়ে শহরব্যাপী ঘুরে বেড়ান তিনি। এসময় হাত নেড়ে তাকে বরণ করে নেন জেলাবাসি। এর আগে সবুজবাগের বাড়িতে বসে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে ভবিষ্যত পরিকল্পনা তুলে ধরেন তিনি।
শুক্রবার ভোরে ঢাকা থেকে সাতক্ষীরার সবুজবাগের বাড়িতে আসেন সাবিনা খাতুন। পরে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে সাবিনা খাতুন জানান,পশ্চাদপদ সমাজে একজন মেয়েকে খেলোয়াড়ী জীবনে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার জন্য প্রচুর সংগ্রাম করতে হয়। তাকেও করতে হয়েছে। মেয়েরা ফুটবল খেলবে,এমনটা নিজের পরিবারেরও কেউ মেনে নেননা। তবুও অদম্য মনোবল ও স্থানীয় কোচ প্রয়াত আকবার আলীর উৎসাহে তিনি আজ এ পর্যায়ে এসেছেন
সাতক্ষীরার পলাশপোলে জন্ম নেওয়া বিত্তহীন পরিবারে ১৯৯৩ সালে জন্মগ্রহণ করেন কৃতি এই ফুটবলার। ২০০৭ সালে অষ্টম শ্রেণিতে পড়াকালীন ফুটবলে পা রেখেছিলেন। ২০০৯ সালেই জাতীয় দলে সুযোগ পান তিনি। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। খেলোয়াড়ী জীবনের শুরুটায় পিতার মত সঙ্গে থেকেছেন শহরের চালতেতলার আকবার আলী। শহরের চালতেতলা এলাকায় ২০০২ সালে জ্যোতি ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নামের একটি আবাসিক সংগঠন গড়ে তোলেন তিনি। সাবিনার হাতে খড়ি সেই প্রতিষ্ঠান থেকে।
এপ্রসঙ্গে জ্যোতি ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সহ-সংগঠক ও আকবার আলীর স্ত্রী রেহেনা আক্তার জানান, সাবিনা তখন নবারুণ স্কুলে ৮ম শ্রেণিতে পড়ে। আন্ত:স্কুল প্রতিযোগিতায় তার খেলা নজর কাড়ে আকবার আলীর। তিনি সাবিনাকে পিটিআই স্কুল মাঠে ফুটবল খেলায় প্রশিক্ষণ দিতে থাকেন। জেলা ও বিভাগীয় বিভিন্ন ইভেন্টের খেলায় আমি ও আমার স্বামী তার সাথে যেতাম।
তিনি আরও বলেন,জ্যোতি ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই মাসুরা পারভীনের হাতে খড়ি। এমনকি মাসুরাকে আমাদের বাড়িতে এনে থাকতে দিয়েছি। দু:খ একটাই মেয়েদের এই সাফল্য আমার স্বামী দেখে যেতে পারলেন না। তিনি ,জ্যোতি ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আবাসিক ছাত্রীদেরকে সহযোগীতার জন্য বিত্তবানদের আহবান জানিয়েছেন।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি হুমায়ুন কবির জানান,শনিবার বেলা ১২ টায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাবিনা খাতুনকে সংবর্ধণা দেওয়া হবে। মাসুরা পারভীন এখনো বাড়িতে আসেননি। তাদের দুজনকে একসাথে জেলা ক্রীড়া সংস্থার পক্ষ থেকে আগামীতে সময় করে সংবর্ধণা দেওয়া হবে।
পূর্ববর্তী পোস্ট