নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ সাতক্ষীরার তালায় স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামী মোস্তফা বিশ্বাসকে (৩২) ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালত। আজ সোমবার (২৭ মার্চ) বেলা ১টায় সাতক্ষীরার জনাকীর্ন আদালতে আসামীর উপস্থিতিতে এই রায় দেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক এমজি আযম।
মামলার বিবরনে জানা গেছে, আসামী তালা উপজেলার চাঁদকাটী গ্রামের আমজাদ বিশ^াসের ছেলে মোস্তফা বিশ্বাসের (৩২) সাথে শিউলী খাতুনের (১৯) ২০০৯ সালের ৭ এপ্রিল বিবাহ হয়। বিয়ের পর থেকেই মোস্তফা বিশ্বাস ও তার পিতা আমজেদ বিশ্বাস যৌতুকের দাবিতে শিউলীকে প্রায়ই নির্যাতন করতো। একপর্যায়ে তারা শিউলীর পরিবারের কাছে নগদ ৫০ হাজার টাকা ও ৩ ভরি স্বর্ণালংকার দাবি করে। এ নিয়ে গোলযোগের জেরে শিউলী তার বাবার বাড়ি তালা উপজেলার রঘুনাথপুরে চলে যায়। ২০০৯ সালের ১৬ই জুলাই ভোর সাড়ে ৫টায় মোস্তফা ও তার পিতা আমজেদ শিউলীদের রঘুনাথপুরের বাসায় তাকে আনতে যান। বাসায় কেউ না থাকায় সকাল ৮টার দিকে তারা শিউলীকে মারপিটের পর শ্বাসরোধ করে হত্যার পর ঘরের দরজা লাগিয়ে পালানোর সময় স্থানীয় জনতা তাদেরকে ধরে ফেলেন। খবর পেয়ে শিউলীর বাবা আব্দুস সবুর বাড়িতে এলে প্রাথমিকভাবে তারা হত্যার কথা স্বীকার করে।
এ ঘটনায় বাদী হয়ে শিউলীর বাবা মোঃ আব্দুস সবুর ২০০৯ সালের ৪ আগস্ট তারিখে তালা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন (৮৭৮/২০০৯)।
সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের পিপি অ্যাড. জহুরুল হায়দর বাবু জানান, ১০ জন স্বাক্ষীর সাক্ষ্যদানের ভিত্তিতে মোস্তফা বিশ্বাসকে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ১০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে। অন্যদিকে আসামীর পিতা চাঁদকাটী গ্রামের আমজেদ বিশ্বাসকে বেকসুর খালাস দিয়েছে আদালত।
এদিকে, এই রায়কে মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রনোদিত বলে দাবি করেছেন দন্ডপ্রাপ্ত আসামী মোস্তফার পরিবারের স্বজনরা। তার বোন মোছাঃ আরিফ খাতুন বলেন, ঘটনার দিন মোস্তফা সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। তার স্ত্রী শিউলীর পূর্বে আরেকটি বিয়ে হয়েছিলো। শিউলীর বাবাই তাকে নির্যাতন করতো উল্লেখ করে তিনি বলেন, নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে শিউলী গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এতে তার ভাইয়ের কোন দোষ নেই বলে দাবি করেন তিনি।##
পূর্ববর্তী পোস্ট