নিজস্ব প্রতিবেদক: সম্প্রতি জন্মনিবন্ধন ফিস সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে নিজের পকেটে ঢুকিয়ে ও করোনাকালে সরকারের দেওয়া বরাদ্দ ত্রানেও ব্যপক লুটপাট চালান আশাশুনি উপজেলার ৩ নং কুল্যা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাছেত আল হারুন চৌধুরী। গুঞ্জন উঠেছে তদন্তে অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় অপসারিত হতে যাচ্ছেন তিনি। এছাড়াও ইউনিয়ন পিচ কমিটির সদস্যের ছেলে ও পিচ কমিটির সেক্রেটারীর ভাতিজা বাছেত নৌকার মনোনয়ন পাওয়া বিস্মিত আওয়ামী লীগে নেতৃবৃন্দ।
পিচ কমিটি পরিবারের সন্তান
কুল্যা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনিত মোঃ আব্দুল বাছেত এর পিতা আব্দুর রহমান চৌধুরী কুল্যা ইউনিয়নের পিচ কমিটির সদস্য। তার আপন বড় চাচা আব্দুর রব চৌধুরী পিচ কমিটির সেক্রেটারী এবং অপর আরেক চাচা সাদুল্লাহ চৌধুরী বিএনটির (১০বছর) সভাপতি ছিলেন। তারা বাবা-চাচারা মিলে মুক্তিযুদ্ধের সময় কুল্যার বিরেন বাবুর ৩০ বিঘা ভিটে বাড়ীতে গরু জবাই করে তা দখলে নেয়। হুমকির মুখে বিরেন বাবুর পরিবার অন্যত্র চলে যায়। এছাড়াও আব্দুল বাছেত আল হারুন আওয়ামী লীগ বা এর অঙ্গ সহযোগী কোন সংঘঠনের সদস্যও নয়।
জন্ম নিবন্ধন ফিস ও করোনাকালীন ত্রাণে লুটপাট
আশাশুনি উপজেলার কুল্যা ইউনিয়নে নিয়ম বর্হিভূত ভাবে অতিরিক্ত জন্মনিবন্ধন ফিস আদায় ও সরকারি কোষাগারে জমা করেননি বাছেত আল হারুন। করোনাকালীন সরাকার প্রদত্ত অসহায় মানুষদের জন্য বরাদ্দ ত্রানেও ব্যপক লুটপাট চালান হারুন। এ নিয়ে কুল্যার ১২জন ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য অভিযোগ দায়ের করেন। স্থানীয় সরকার কর্তৃক তদন্তে বাছেত আল হারুনের এসব অনিয়মের অভিযোগ প্রমানিত হয়। ফলে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক সাতক্ষীরা কর্তৃক প্রেরিত ০৫.৪৪.৮৭০০.০০৭.২৭.০২১.১৬.১৪৭ নং স্মারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সিনিয়র সচিব, স্থানীয় সরকার বিভাগে একটি পত্র প্রতিবেদন সংযুক্ত সহকারে পাঠানো হয় চলতি বছরের ২১ অক্টোবর তারিখে।
অপরদিকে প্রতিবেদনটি পেয়ে ১৭ নভেম্বরে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, ইউপি-১ শাখা হতে ৪৬.০০.৮৭০০.০১৭.২৭.০০১.১৬.৯৪৮ নং স্মারকে উপসচিব মোঃ আবুজাফর রিপন স্বাক্ষরিত দশ দিনের সময় দিয়ে একটি কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি কর হয়।
নোটিশে বলা হয় বাছেত আল হারুন চৌধুরী, চেয়ারম্যান, ৩নং কুল্যাই ইউনিয়ন পরিষদ আশাশুনি, সাতক্ষীরাকে জন্মনিবন্ধন ফিস বাবদ প্রাপ্ত অর্থ বিধি মোতাবেক প্রতিমাসে সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে নিজের কাছে রাখা এবং করোনাকালীন সময়ে ইউনিয়ন পরিষদের অনুকূলে বরাদ্দকৃত ত্রান বিতরনে অনিয়ম অভিযোগে কেন এর বিরুদ্ধে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ এর ৩৪(৪) অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবেনা এই মর্মে জেলা প্রশাসক কর্তৃক চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দিতে বলা হয়েছে। জেলা প্রশাসক কর্তৃক আদেশ প্রাপ্ত হয়ে স্থানীয় সরকার সাতক্ষীরা এর সহকারী পরিচালক সুমনা আইরিন গত ২৩ নভেম্বর তারিখে সাত দিনের মধ্যে এ নোটিশের জবাব চাওয়া হয়।
এমতাবস্থায় আশাশুনি উপজেলার ৩ নং কুল্যা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাছেত আল হারুন চৌধুুরী অপসারন হতে পারেন। এরকম একজন বিতর্কিত ব্যক্তিকে নৌকার মনোনয়ন দেওয়া ক্ষোভ প্রকাশ করেছে তৃণমূল আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ। তাদের ভাষ্য চিহ্নিত রাজাকার পরিবারের সন্তান ও দুর্নীতের দায়ে অপসারিত হতে যাচ্ছে এমন ব্যক্তিকে নৌকা প্রতীক দিয়ে কার্যত ইউনিয়ন পরিষদটি আওয়ামী লীগের বেহাত হতে যাচ্ছে।
পূর্ববর্তী পোস্ট